Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কমিশনে মান বাড়াল গুটিপিসি

সে নিদান পেয়ে মাঠে নেমে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন তুলে ধরেছিল গুটিপিসিকে। তখন কে জানত সেই গুটিপিসিই রীতিমতো ‘মডেল’ হয়ে উঠবে! 

নির্বাচনী ম্যাসকট গুটিপিসি।

নির্বাচনী ম্যাসকট গুটিপিসি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৪
Share: Save:

হাতে কালিটুকু যেন থাকে, যেন ভোট দিতে এসে ফাঁকা হাতে ফিরে না যান কেউ— লোকসভা নির্বাচনে এটাই ছিল দেশের নির্বাচন কমিশনের মন্ত্র। সে ব্যাপারে ভোট কর্মীদের জনে জনে সতর্ক করার পাশাপাশি আমজনতাকে কিছুটা ঠেলেই ভোট কেন্দ্রে পাঠানোর প্রচ্ছন্ন নিদান দিয়েছিল কমিশন।

সে নিদান পেয়ে মাঠে নেমে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন তুলে ধরেছিল গুটিপিসিকে। তখন কে জানত সেই গুটিপিসিই রীতিমতো ‘মডেল’ হয়ে উঠবে!

নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক জার্নালে সে কথাই কবুল করেছে কমিশন।

গুটিপিসির সেই ম্যাসকটই জেলা জুড়ে সচেতন করতে নেমে ছিল ভোটারদের। ভোটগ্রহণ কেন্দ্র সম্পর্কে সচেতন করতে ‘সহজপাঠ’ নামে একটি কর্মসূচি নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সঙ্গে ছিল প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য হুইলচেয়ার থেকে বৃদ্ধদের গাড়ি করে তুলে এনে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ।

চিঠি গিয়েছিল ভিনরাজ্যে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছেও। অনুরোধ ছিল, আসুন ভোট দিতে। জেলা নির্বাচন কমিশনের সেই সাফল্য কমিশনের ত্রৈমাসিক জার্নালে তুলে ধরা হয়েছে। জেলার তদানীন্তন নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, ‘‘খবরটা শুনে বড় ভাল লাগছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম সব ভোটার যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন। সে কাজে সাফল্য পাওয়ায় কমিশনের এই স্বীকৃতি সত্যিই মন ভরিয়ে দিল!’’ খুশি, বর্তমান জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাও। তিনি বলেন, ‘‘জেলার ভাল কাজের স্বীকৃতি দেওয়ায় খুব ভাল লাগছে।’’

কাজটা শুরু হয়েছিল ভোটার তালিকায় নাম তোলা, নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির মধ্যে দিয়ে। গত বছরের শেষের দিকে ভোটার তালিকার কাজ শুরু হয়েছিল। সে সময় মুর্শিদাবাদের পুরুষ-মহিলা ভোটারদের অনুপাত ছিল প্রতি হাজারে ৯৪১। সে সময় গুটিপিসির ম্যাসকট জেলার আনাচকানাচ ঘুরে সব স্তরের মানুষকে সচেতন করেছিল।

দিন কয়েকের মধ্যেই তার ফল স্পষ্ট হতে শুরু করেছিল— পুরুষ মহিলা ভোটারের অনুপাত বাড়তে থাকে ক্রমেই। ভোটার তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা যায় সেই অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৯৫৮। অর্থাৎ প্রতি এক হাজার পুরুষ ভোটারে মহিলার সংখ্যা ৯৫৮। প্রতিবন্ধী, অন্তঃসত্ত্বা রুগ্্ণ মা, কিংবা প্রতিবন্ধী ভোটারদের ‘সহজপাঠ’ নামে একটি প্রকল্প নিয়ে ভোটকেন্দ্রের বিষয়ে সচেতন করারও বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়।

‘বিপ ম্যাট’ নামে এক ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে সহজেই বুথ কেন্দ্র সম্পর্কে বোঝানো হয়। সে সব উদ্যোগের কথাই কমিশনের জার্নালে তুলে ধরা হয়েছে।

শুধু কর্মসূচি পালন নয়, গুটিপিসি ঘুরতে বেরিয়েছিল গ্রামে-গঞ্জে ঘরে ঘরে। দিন কয়েকের মধ্যেই গুটিপিসি ছড়িয়ে গিয়েছিল মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক দুয়ারেও। ভোট দিতে উৎসাহ দেওয়া থেকে থেকে ভোট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হয় গ্রামীণ মানুষকে। শুরু হয় প্রচারপত্র বিলি করাও। যার ফলে ৭৭.১৭ শতাংশ প্রতিবন্ধী, ৭০.৮৪ শতাংশ গর্ভবতী মহিলা ভোট দিতে গিয়েছিলেন। জার্নালে তুলে ধরা হয়েছে এ সব তথ্যই। বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের ‘সামাজিক প্রতিবন্ধীদের’ও নাম উঠেছিল ভোটার তালিকায়। হাসপাতাল থেকে গিয়েছিলেন ৭২ জন। জার্নাল বলছে য়া রাজ্যে সব থেকে বেশি।

শুধু জার্নাল যা বলেনি, ভাগ্যিস গুটি পিসি ছিল!

অন্য বিষয়গুলি:

Election Commission Gutipisi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy