Advertisement
E-Paper

ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু নদিয়ার চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার, কালাচের কামড়ই দায়ী, অনুমান চিকিৎসকদের

পড়ুয়ার বাড়ির লোকজন রাতে একটি ছোট সাপকে ঘর থেকে বেরোতে দেখেছিলেন। কিন্তু চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার কোনও যন্ত্রণার অনুভূতি না থাকায় বাড়ির লোকেদের সাপের কামড়ের সন্দেহও হয়নি।

representational image

— প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:২৯
Share
Save

রাতের খাবার খাওয়ার আগেই ঘুম পাচ্ছে বলে শুয়ে পড়েছিল চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। মধ্যরাতে শুরু হয় বমি সঙ্গে পেটের অসহ্য যন্ত্রণা। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েও মেলেনি সুফল। ভোর থেকে শরীর নিস্তেজ হতে শুরু করলে তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নদিয়ার শান্তিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সাপের কামড়ের ওষুধ বা ‘অ্যান্টিভেনাম সিরাম’ (এভিএস) প্রয়োগ করা হলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরের। কিশোরের মৃত্যুতে ‘নীরব ঘাতক’ কালাচ সাপ সম্পর্কে মানুষকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শান্তিপুরের বাবলা পঞ্চায়েতের উত্তর কায়স্থ পাড়ার বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণির নারায়ণ দেবনাথ। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ ঘুম পাচ্ছে বলে ঘুমিয়ে পড়ে ওই কিশোর। মধ্যরাতে হঠাৎ পেটে যন্ত্রণা, সঙ্গে বমি শুরু হয়। ঘরের মধ্যে একটি ছোট কালো সাপকেও দেখতে পান বাড়ির লোকেরা। কিন্তু চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার শরীরে কোথাও কোনও ক্ষতচিহ্ন না থাকায় সাপে কামড়ানোর ব্যাপারে সন্দেহ করেনি পরিবার। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ভোরের দিকে শান্তিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় ওই কিশোরকে। পেটব্যথা, চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসা-সহ একাধিক উপসর্গ দেখে চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গেই তাকে কালাচ সাপে কামড়েছে বলে নির্ণয় করেন। তড়িঘড়ি দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় মাত্রায় এভিএস। কিন্তু তাতেও হল না শেষরক্ষা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ওই কিশোর। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কালাচের কামড়ে তেমন কোনও যন্ত্রণার উপসর্গ থাকে না। কিছু ক্ষণ পর থেকেই রোগীর শরীর অবসন্ন হয়ে পড়তে থাকে। রোগীর খুবই ঘুম পেতে থাকে। ঠিক যেমনটা হল শান্তিপুরের পড়ুয়ার ক্ষেত্রে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে পরিস্থিতি অন্য রকম হতে পারত বলেও মনে করেন অনেকে।

চিকিৎসক শুভময় সরকার বলেন, ‘‘কলাচ সাপের ক্ষতস্থানে সাধারণত কোনও চিহ্ন কিংবা জ্বালা-যন্ত্রণা থাকে না। উপসর্গহীন এই প্রাণঘাতী আক্রমণ চিহ্নিত করা খুবই মুশকিল। অনেক সময় অ্যান্টিভেনাম সিরাম দিলে উপসর্গের নিরাময় হয়। কিন্তু তা না হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রোগী খুব দ্রুত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে। তাই কালাচ সাপের দংশনের সন্দেহ হলেই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।’’

বর্ষাকালে গ্রামবাংলায় সাপের কামড়ের ঘটনা খুবই সাধারণ। যদিও কোন সাপ বিষধর এবং কোন সাপের বিষ নেই, তা নিয়ে সর্বত্র সাধারণ মানুষের সচেতনতা সমান নয়। তার উপর কালাচের মতো সাপের কামড়ে যন্ত্রণার অনুভূতি না হওয়ায় প্রায়শই তা আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে। তেমনই ঘটনা ঘটল নদিয়ায়। যার জেরে প্রাণ গেল চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার।

snake bite Student Death

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}