Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Cattle

বেবিফুডের বাক্সের আড়ালে গরু

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে লরিতে ঢাকা দিয়ে গরু আসত মুর্শিদাবাদে। তারপর তা লালবাগ জঙ্গিপুর ভায়া জিয়াগঞ্জ, ভগবানগোলা রাজ্য সড়কের ওপর লালগোলা ও রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকায় খালি হত রাস্তায়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মৃন্ময় সরকার
লালগোলা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:২৪
Share: Save:

গভীর রাত। রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকার সম্মতিনগর থেকে শুরু করে সাইদাপুরের রাস্তা হয়ে লালগোলা থানা এলাকার খান্দুয়ার পর্যন্ত রাজ্য সড়কের পাশে এসে দাঁড়াত একের পর এক দশ চাকা ও ১৬ চাকার লরি। লরিগুলোর নম্বরপ্লেট এ রাজ্যের নয়। লরির পিছনটা ছাই রঙের ত্রিপল দিয়ে ঢাকা। মনে হত, হয়তো কোনও কোম্পানির বেবিফুডের পেটি ঢাকা রয়েছে। কিন্তু তা নয়। সেই লরি ভর্তি থাকত গরুতে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই ভাবেই গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে লরিতে ঢাকা দিয়ে গরু আসত মুর্শিদাবাদে। তারপর তা লালবাগ জঙ্গিপুর ভায়া জিয়াগঞ্জ, ভগবানগোলা রাজ্য সড়কের ওপর লালগোলা ও রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকায় খালি হত রাস্তায়। এমন ভাবে গরু খালি করা হত যাতে আর সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কোনও সমস্যা না হয়। তারপর সেই গরু পদ্মা পেরিয়ে চলে যেত বাংলাদেশে।

অভিযোগ, গরু পাচার হওয়ার সময় সব জায়গায় ব্যবহার করা হত এনামুলের সই করা প্যাড। পাচার হতে হতে এনামুলের গরু চলতি নামে ‘প্যাড’ হিসেবেই পরিচিত হয়ে যায়। এখন সীমান্ত এলাকায় ‘প্যাড’ বললে সাধারণ মানুষ থেকে পাচারকারীরা এনামুলের গরুর কথাই বুঝবে বলেই দাবি গোয়েন্দাদের। কিন্তু ‘প্যাড’ নাম হল কেন? উত্তরে গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সীমান্তে শুধু এনামুলই নয় আরও ছোটখাটো পাচারকারীরা ছিল। তারা যাতে সুযোগ না নিতে পারে এবং পাচার হতে যাওয়া গরু যে এনামুলেরই তা বোঝাতেই এনামুল নিজের সই করা প্যাড ব্যবহার করত। যেই প্যাড বর্ডারে দেখাত এনামুলের শাগরেদরা। আর তাতেই মিলত ছাড়।

২০১৮ সালের প্রথম দিকে গরু পাচারের জন্য ঘুষ নেওয়ার সময় বিএসএফের এক কমান্ডান্টকে হাতেনাতে ধরেছিল সিবিআই। ওই সময় গ্রেফতার হয় এনামুলও। সিবিআইয়ের দাবি, গরু পাচারের সময় মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার নানা জনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এনামুলের বাহিনীর। গোয়েন্দাদের দাবি, কার কার কাছে কত টাকা করে পৌঁছেছে, সেই লেনদেনের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লালগোলার এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘ওই সময় রাস্তার ওপর প্রকাশ্যেই গরু খালি হয়ে বর্ডারে গিয়েছে। এখনও বর্ডারের গ্রাম গুলোয় যদি ‘প্যাড’ বলেন তাহলে লোকে সেই এনামুলের গরুর কথাই মনে করবে।’’ কিন্তু সরাসরি মুখ খুলতে এখনও নারাজ এলাকার মানুষ। তাঁদের কথায়, এনামুলের চোখকান সর্বত্রই রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Cattle Smuggling Cow
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy