প্রার্থী ঘোষিত হওয়ার পরে দলের নেতাদের সঙ্গে দেবাশিস। নিজস্ব চিত্র
বিকেলে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হল। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা নামার আগেই সোমবার দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা শুরু হল দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। মন্ত্রী সুব্রত সাহার প্রয়াণে শূন্য হয়েছে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্র। সেই কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই তৃণমূলের প্রার্থী হলেন সাগরদিঘি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস। ২৭ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন। ফল ঘোষিত হবে ২ মার্চ।
তৃণমূলের দাবি, প্রার্থী ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় তারা ভোটযুদ্ধে বিরোধীদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রইল। সুব্রতবাবু গত নির্বাচনে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। এ বার তৃণমূলের ভোট বাড়বে বলেই দাবি।
তবে কাঁটাও কিছু রয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একটি অংশ চেয়েছিলেন, সুব্রতবাবুর পরিবারের কাউকেই উপনির্বাচনে প্রার্থী করতে। তাতে মানুষের সহানুভূতি শাসক দল পেত। সুব্রতবাবু খুবই সজ্জন ব্যক্তি বলে পরিচিত ছিলেন। বিরোধীরাও তাঁকে সম্মান করতেন। তাই তাঁর স্ত্রী বা পুত্রকে ভোটে দাঁড় করালে লাভ বেশি হত বলে তৃণমূলের কিছু নেতার দাবি। তৃণমূলের অন্দরেই খবর, দেবাশিস অগস্টে দলের ব্লক সভাপতি হওয়ার পরে সুব্রতবাবুর সঙ্গে তাঁর সামান্য দূরত্বও তৈরি হয়েছিল। তবে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘অতীত ভুলে এখন সর্বশক্তি দিয়ে দলের ঘোষিত প্রার্থীকে জেতাতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম, স্থানীয় কোনও ব্যক্তিকেই উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হোক। দলের নেতৃত্ব সে কথা রেখেছেন। এ বার আমাদের দায়িত্ব দ্বন্দ্ব ভুলে বড় ব্যবধানে ভোটে জেতা।’’
ঘটনাচক্রে দেবাশিস তৃণমূল দলনেত্রীর দূর সম্পর্কের আত্মীয়ও। তাঁদের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছোটবেলায় কয়েক বার এসেছিলেন বলে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সাগরদিঘিতে সভামঞ্চ থেকেই জানিয়েছিলেন।
প্রার্থী ঘোষণার পর খলিলুর-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব সমসাবাদে দেবাশিসের বাড়িতে পৌঁছন স্থানীয় নেতারা। তাদের মধ্যে প্রাথমিক বৈঠক হয়। তৃণমূলের উত্তর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনের চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “দেবাশিসের জয় শুধু সুনিশ্চিত তাই নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তার ভাল প্রভাব পড়বে।” খলিলুর বলেন, “মঙ্গলবার সাগরদিঘিতে স্মরণ সভা রয়েছে প্রয়াত সুব্রতবাবুর। সেই সভা থেকেই শুরু হবে নির্বাচনী প্রচার। দেওয়াল লিখন ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।”
মাত্র পাঁচ মাস আগে গত বছর অগস্টে ব্লক সভাপতি পদে বসানো হয়েছিল দেবাশিসকে। এ দিন দেবাশিস বলেন, “দল গুরুদায়িত্ব দিয়েছে। সুব্রতদার পথেই এগিয়ে নিয়ে যাব সাগরদিঘিকে।” তবে দলীয় সূত্রে খবর, বিধায়ক নির্বাচিত হলে ব্লক সভাপতি পদে দেবাশিসের জায়গায় দায়িত্বে নিয়ে আসা হবে অন্য কাউকে।
বিরোধীরা এই নির্বাচনে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। গত নির্বাচনে প্রার্থী না দিয়ে কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল সিপিএম। তা সত্ত্বেও তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৯ শতাংশ। বিজেপি সংখ্যালঘু মাফুজা খাতুনকে প্রার্থী করে পায় ২৪ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট। তুলনায় তৃণমূল একাই ৫০.৯৫ শতাংশ। বছর ঘুরেও সাগরদিঘির রাজনৈতিক এই প্রেক্ষাপটে খুব একটা বদল ঘটেনি। তার উপর এবারে সিপিএম ও কংগ্রেস জোট ভেঙে পৃথক প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বলেই সোমবার রাত পর্যন্ত খবর।
বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠক ছিল শনিবার। তবে তারা সাগরদিঘির উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ।ধনঞ্জয় বলেন, “আমরা স্থানীয় প্রার্থী চেয়েছি। বৃহস্পতিবার জেলায় কোর কমিটির বৈঠকেও সেই প্রস্তাবই উঠেছিল। শনিবার রাজ্য বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ তাঁর ইঙ্গিত, ২৯ জানুয়ারি বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে। বিজেপি নতুন মুখই এই আসনে চাইছে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy