কলকাতা হাইকোর্ট। —ফাইল চিত্র।
নবদ্বীপে স্বরূপগঞ্জ ঘাটের সামনের যে জমিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়েছে, সেটি ঠিক ভাবে অধিগ্রহণের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই জমি শশাঙ্ক বিশ্বাস ও তাঁর শরিকদের। নদিয়া জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ সেখানে বাসস্ট্যান্ড তৈরি করেছে। কিন্তু জমিটি ঠিক ভাবে অধিগ্রহণ করা হয়নি এবং তাঁরা যথার্থ ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন শশাঙ্কেরা। তার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এই নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি নবদ্বীপে গঙ্গার পূর্ব পাড়ে স্বরূপগঞ্জ পঞ্চায়েতে পাশপাশি দু’টি সরকারি প্রকল্প গড়ে উঠেছে। এর একটি বাসস্ট্যান্ড, যেটি তৈরি করেছে নদিয়া জেলা পরিষদ। তার ঠিক পাশে, উত্তর দিকে কৃষ্ণনগর পুরসভা গড়ে তুলেছে জলপ্রকল্প। এই দুই প্রকল্পের মাঝখানেই ছিল শশাঙ্ক বিশ্বাস এবং তাঁর শরিকদের দশ কাঠা রায়তি জমি। তাঁদের অভিযোগ, সেই দশ কাঠা জমি বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে ঢুকে গেলেও তা নিয়ম মেনে অধিগ্রহণ করা হয়নি, তাঁরা অধিগ্রহণ আইন মোতাবেক প্রাপ্য পাননি। শশাঙ্কের ছেলে শুভঙ্কর বিশ্বাস জানান, স্বরূপগঞ্জ ঘাট লাগোয়া দু’টি প্রকল্পের মধ্যে যে জমিতে জলপ্রকল্প গড়ে উঠেছে সেই এক বিঘা জমি কৃষ্ণনগর পুরসভা তাঁদের কাছ থেকে নিয়ম মেনেই কিনেছিলেন। তাঁরা সেটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরেও নেন। পড়ে থাকে আরও দশ কাঠা জমি। তার লাগোয়া অংশে তখন তৈরি হচ্ছিল বাসস্ট্যান্ড। দশ কাঠা জমি নির্মীয়মাণ বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে ঢুকে যায় জমির মালিকদের অজ্ঞাতসারেই। পরে বিষয়টি টের পেয়ে তাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হন। জমিমালিকদের আইনজীবী ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার জানান, গত বছরেই জেলা পরিষদ বাস স্ট্যান্ড তৈরি করেছে। বিচারপতি সরকার নির্দেশ দিয়েছেন, জমির মালিকদের স্বার্থ যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, তা দেখতে হবে। যদিও জেলা পরিষদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, নিয়ম মেনেই ওই জমিতে বাস স্ট্যান্ড তৈরি হয়েছে।
শুভঙ্করের বক্তব্য, “আমরা কিন্তু উন্নয়নের বিপক্ষে নই। এই এলাকায় একটি বাসস্ট্যান্ড হয়েছে এবং তা মানুষের কাজে লাগছে, এতে আমরাও খুশি। আমরাও ওই বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করি। কিন্তু যে ভাবে জমির শরিকদের অন্ধকারে রেখে জমিটি বাসস্ট্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল অধিগ্রহণের নিয়ম না মেনে এবং জমিমালিকেরা প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হলেন, তার বিহিত চাইতেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”
জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু বলেন, “আদালতের কাগজপত্র আমরা এখনও হাতে পাইনি। যদি দেখা যায়, আমাদের তরফে সত্যিই কোনও ত্রুটি আছে, নিশ্চয়ই তা শুধরে নেওয়া হবে। কিন্তু যদি দেখা যায়, আদালতকে ভুল বোঝানো হয়েছে, সেই মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy