আন্ডারপাসের দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ। কৃষ্ণনগর পালপাড়ায়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে লরি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। ওই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা এ দিন সকাল থেকে ওভার ব্রিজের নীচে দিয়ে একটি আন্ডারপাস তৈরির দাবিতে প্রায় দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকেরা এসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে আন্ডারপাস তৈরি না হলে স্থানীয়েরা আবারও জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখবেন জানিয়ে দিয়েছেন।
কৃষ্ণনগরের পালপাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। ওই মোড় দিয়েই জাতীয় সড়ক থেকে কৃষ্ণনগরে ঢুকতে হয়। সেই সঙ্গে সেখানে নিয়মিত আনাজের হাট বসে। রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কারণে এই এলাকার উপর দিয়ে ওভার ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। ফলে, এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে খুবই সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাঁদেরকে প্রায় এক কিলোমিটার গিয়ে, বাদকুল্লা মোড়ের আন্ডারপাস দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে দাবি। বিশেষ করে, বহরমপুরের দিকেই বেশি সমস্যা। সেই দিকে রাস্তা পার হওয়ার কোনও ব্যবস্থাই নেই। কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার মানুষ চার লেনের চওড়া জাতীয় সড়ক পার হতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও একাধিক বার দুর্ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরেই ওই এলাকায় একটি আন্ডারপাস তৈরির দাবি করে আসছিলেন। জানা গিয়েছে, পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই নিয়ে একাধিক বার বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকা দিয়ে ঘাস মাথায় করে জাতীয় সড়ক পেরনোর সময়ে বহরমপুরগামী এক লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। মৃতের নাম সুবীর ভুইত (৬৫), বাড়ি ওই পালপাড়া এলাকায়। ওই দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রায় ঘণ্টাদুয়েক রাস্তা অবরোধ চলে।
প্রখর রোদের মধ্যে এই ভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন নিত্যযাত্রী তথা দূরপাল্লার যাত্রীরা। তাঁরা গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকেন। অবরোধের খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেওয়া চেষ্টা করে। কিন্তু অবরোধকারীরা আন্ডারপাসের দাবিতে অবরোধে অনড় থাকেন। শেষ পর্যন্ত জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকেরা এসে আন্ডারপাস তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলে ওই অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বহরমপুরের দিকে, ওভার ব্রিজের শেষ প্রান্তে জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে যাতায়াতের জন্য একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে যত দিন না স্থায়ী সমাধান হচ্ছে, তত দিন ঘটনাস্থলে ট্রাফিক পুলিশ রাখা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিক্ষোভকারী এক স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব দত্ত বলেন, “আমরা চাই না আর কোনও মানুষের জীবন এ ভাবে অকালে চলে যাক। আন্ডারপাস না হলে আবার আমরা আন্দোলনে নামব। সে বার আরও বড় আকারে আন্দোলন করা হবে।”
ওই বিষয়ে ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’র কৃষ্ণনগর প্রোজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিটের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর অজয় গাদেকার বলেন, “আমরা পুরো বিষয়টা খতিয়ে দেখছি। ওখানে আন্ডারপাস তৈরি করতে হলে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy