চলছে পতাকা লাগানোর কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
কল্যাণী ব্লকে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও কাটল না। বরং তা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ই প্রাধান্য পেয়েছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় তাঁর ঘনিষ্ঠরাই টিকিট পেয়েছেন বলে বিজেপির অন্য শিবিরের লোকজন ক্ষুব্ধ। তবে প্রকাশ্যে অভিযোগ উড়িয়ে দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস বলেন, ‘‘ পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংগঠনই প্রাধান্য পেয়েছে। বিজেপির হয়ে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তো সংগঠনের।"
কিন্তু বিজেপির অন্দরের খবর, কল্যাণী এলাকায় বিজেপি তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। এক দিকে রয়েছে বিধায়ক অম্বিকা রায়ের শিবির। অন্য দিকে বনগাঁ লোকসভার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের শিবির। আর তৃতীয় হল, সংগঠন-ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের শিবির। এদের মধ্যে দূরত্বের কারণে সংগঠন দুর্বল হচ্ছে। অথচ, গত বিধানসভা নির্বাচনেও কল্যাণীর বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির ভাল প্রভাব ছিল। সেখানে এই পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি এখনও সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে ময়দানে নামতে পারেনি।
দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, অম্বিকা রায়ের সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের দূরত্ব তৈরি হয়েছে প্রায় বছর দেড়েক আগে। সেই সময় মতুয়া এলাকার কয়েক জন বিধায়ক বেশ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে দলীয় হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছাড়েন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অম্বিকা রায়। পরে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিয়ে শান্তনু ঠাকুর বনগাঁর নিজের বাড়িতে আলোচনায়ও বসেন। সেখানে যাননি অম্বিকা রায়। বিধানসভা নির্বাচনে অম্বিকা রায় কল্যাণী বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী হলে দলের একটা অংশ প্রকাশ্যেই বিরোধিতা করেছিল। তাঁদের কেউ কেউ শান্তনু ঠাকুরের শিবিরের বলে পরিচিত।
শান্তনু ঠাকুরের শিবিরের নেতা তারকনাথ সরকার অভিযোগ করেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে সংগঠনের থেকে ব্যক্তি প্রাধান্য পেয়েছে। তাতে সংগঠনের ক্ষতি হচ্ছে।" যদিও বিধায়ক অম্বিকা রায়ের দাবি, "প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংগঠনই সব কিছু করেছে। আমি কোনও মতামত দিইনি। দলের মধ্যে মুখোশধারী কিছু লোক আছে, যারা দল বিরোধী কথাবার্তা বলে।"
মঙ্গলবার কল্যাণী ব্লকের সরাটি পঞ্চায়েতের ১ নম্বর সংসদে ১ নম্বর আসনে বিজেপির হয়ে দু’জন বি ফর্ম জমা দিয়েছেন। ওই আসনে বিজেপির তিন জন মনোনয়ন দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে মঙ্গলবার এক জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। প্রতিমা মুহুরিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বি ফর্ম দেওয়া হয়। তিনি সেই ফর্ম জমা দেন। কিন্তু অন্য এক জন তনু দাসও বি ফর্ম নিয়ে এসেজমা দেন।
একই আসনে দু’জন কী ভাবে দলের প্রতীক পেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। সংগঠনের কেউ কেউ এর জন্য অম্বিকা রায়ের দিকেই আঙুল তুলছেন। বিজেপির কল্যাণী গ্রামীণ মণ্ডল-১-এর সভাপতি দশরথচন্দ্র অধিকারী বলেন, “ওই আসনে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিমা মুহুরিকে সমর্থন করা হয়েছে। তিনিই ওই আসনে বিজেপি প্রার্থী।” কল্যাণী ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রতিমাকেই বিজেপি প্রার্থী হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। দ্বিতীয় জনকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।
অম্বিকা রায়ের দাবি, “বি ফর্ম দেওয়ার এক্তিয়ার জেলা সভাপতি। আমার এক্তিয়ার নেই।” আবার বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাসের দাবি, “নদিয়া জেলার বি ফর্মে এক জনই সই করেন। কোথা থেকে বি ফর্ম আসছে, কে দিল এর উত্তর তো আমি দিতে পারব না।” নদিয়া জেলার বিজেপির প্রতীক দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থাৎ বি ফর্মে সই করার দায়িত্বে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা নদিয়া দক্ষিণের ইন-চার্জ মনোজ কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, “একটা পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থীদের কাছে বি ফর্ম পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথায় কী হল, না দেখে বলা মুশকিল।” নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy