—প্রতীকী চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এই আবহে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ‘ভুয়ো’ ওয়েবসাইট তৈরি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপি সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
অভিযোগ, বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থাতে উচ্চ পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে এই কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে একটি সংস্থার নামে একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইটও তৈরি করা হয়েছিল। সেই সব ওয়েবসাইটে নাম নথিভুক্ত করার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উ়ঠেছে।
এই প্রতারণা চক্রের মূলচক্রী হিসাবে উঠে এসেছিল রানাঘাটের পায়রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য বিল্টু মিত্রের নাম। বৃহস্পতিবার লালবাজার সাইবার ক্রাইমের আধিকারিকেরা, বিল্টুকে গ্রেফতার করে। রানাঘাটে নিজের বাড়ি থেকেই তাঁকে ধরে সোজা কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর লালবাজার সাইবার ক্রাইম বিভাগে কলকাতার এক মহিলা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে প্রতারণা চক্রের কথা। সেই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে বিল্টুর নামে।
তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন শুধু অভিযোগকারিণী নন, প্রতারণার জালে আটকে পড়েছেন অনেকেই। ‘ভুয়ো’ সংস্থার নামে ‘ভুয়ো’ ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণার ছক করা হয়েছিল। বর্তমানে সেই ওয়েবসাইটের কোনও অস্তিত্ব নেই। তদন্তে আরও উঠে এসেছে, বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির গুরুত্বপুর্ণ পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনলাইনে টাকা তুলত সংস্থাটি।
পুলিস সূত্রে খবর, প্রায় ৬ কোটি টাকা প্রতারণা করেছিল ‘ভুয়ো’ সংস্থাটি। প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকটি সাইবার ক্যাফেকে বেছে নিয়ে সেখান থেকেই কাজ চালাত প্রতারকেরা। আগেই এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই জানা গিয়েছিল বিল্টুর কথা। বৃহস্পতিবার রানাঘাট থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পায়রাডাঙ্গার প্রীতিনগর এলাকায় অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দেন লালবাজার সাইবার ক্রাইম বিভাগের আধিকারিকেরা। বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বিজেপি সদস্যের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন হয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পায়রাডাঙ্গা বাজারে বিল্টুর একটি ছোট সাইবার ক্যাফে রয়েছে। তবে বিল্টু যে এমন প্রতারণা চক্র চালাত তা ভাবতেই পারছেন না পায়রাডাঙ্গার মানুষ। এলাকাবাসীর কথায়, বিল্টু খুবই মিশুকে স্বভাবের ছেলে ছিল। শুধু এলাকাবাসী নয়, ছেলের এই কীর্তির কথা মানতে পারছেন না পরিবারের লোকেরাও।
এই গ্রেফতারির ঘটনায় রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতারণা, জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে বিজেপির যোগ একাধিক বার প্রমাণিত হয়েছে। আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দলের পঞ্চায়েত সদস্য যে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবেন তাতে আর আশ্চর্য হওয়ার কী আছে।’’ তবে এই ধরনের ঘটনাকে দল কখনওই সমর্থন করে না বলে জানান নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ অপরাধ করে থাকলে আইন তার শাস্তি দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy