পরিযায়ী উড স্যান্ডপাইপারের পাশাপাশি চোরাশিকারিদের জালে স্থানীয় গো-শালিখও। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক বছর আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন পক্ষীপ্রেমীরা। তার পরেও ছবিটা একটুও বদলায়নি। বন্যপ্রাণ আইন আর সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নদিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবাধে চলছে পাখি চোরাশিকার!
অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় বিষের টোপ দিয়ে আর ফাঁদ পেতে অবাধে শিকার শুরু হয়েছে শীতের অতিথি নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখিদের। মারা পড়ছে স্থানীয় পাখিরাও। প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও জেলার বাইরের পাখির মাংস বিক্রি চক্রের একটি অংশ তেহট্ট মহকুমায় নানা প্রান্তে পাখির চোরাশিকার চালাচ্ছে। এর ফলে আগামী দিনে পরিযায়ী পাখি আসা বন্ধ হতে পারে বলে পক্ষীপ্রেমীদের আশঙ্কা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে ইউরোপ ও উত্তর এশিয়ার দেশগুলি থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন খাল-বিলে-চাষ জমিতে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা শুরু হয়। নদিয়া জেলার ৪টি মহকুমার বিভিন্ন জলাশয় ও চাষের জমিতে পরিযায়ী বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস, কাদাখোঁচা জাতীয় পাখি এমনকি বগেরি-ভরুই জাতীয় পাখিদের ঝাঁক আসে। আর তাদেরই পিছনে আসে চোরাশিকারিরা।
পাখির চোরাশিকার প্রসঙ্গে নদিয়া মুর্শিদাবাদ ডিভিশনের বন দফতরের আধিকারিক প্রদীপ বাউড়ি বলেন, ‘‘প্রতি বছর শীতের শুরুতে পরিযায়ী পাখিদের চোরাশিকার রুখতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিরন্তর প্রচারের ব্যবস্থা থাকে।’’ যদিও বেতাই অঞ্চলের পক্ষীপ্রেমী নিউটন বিশ্বাসের কথায়, ‘‘চাঁদবিল ও এলাকার সমস্ত জলাশয় কমবেশি পরিযায়ী পাখিদের আগমন ঘটে। পরিযায়ী পাখিদের দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এলাকায়। সরকারের নজরদারি একটু বাড়লেই চোরাশিকার বন্ধ করা সম্ভব।’’
এ প্রসঙ্গে তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, ‘‘প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তেহট্টের পক্ষী পর্যবেক্ষক শুভঙ্কর ঘোষের কথায়, ‘‘প্রশাসনিক উদাসীনতায় চাপাগারার মাঠ সংলগ্ন জলাশয় ও চাঁদবিলে যে ভাবে পাখির চোরাশিকার চলছে, তা অবিলম্বে বন্ধ না হলে আগামী দিনে জেলায় পরিযায়ী পাখিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’’
চাপড়ার পক্ষীপ্রেমী সুদেব হালদারের অভিযোগ, ‘‘বিষের টোপ, ফাঁদ, জালের সাহায্যে রাত দিন সব সময়েই চোখের পাখি শিকার চলছে। পরিযায়ী পাখিরা আমাদের অতিথির মতো। তাদের জন্য যদি একটু নিরাপদ স্থান সঙ্কুলান করতে না পারি, তবে তা আমাদের লজ্জা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy