সুশান্তের সঙ্গে মেয়ের বন্ধুতার কথা স্বীকার করলেন সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
হত্যাকাণ্ডের দু’সপ্তাহ পর এই প্রথম অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীর সঙ্গে মেয়ের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে মুখ খুললেন সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী। সুশান্তের সঙ্গে সুতপার বন্ধুতার সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, এ-ও জানিয়েছেন, সেই সম্পর্ক এক সময় ভেঙেও গিয়েছিল। মেয়ে সুতপা খুন হওয়ার পর এই প্রথম এমন মন্তব্য করলেন স্বাধীন।
সোমবার বহরমপুর থানায় গিয়েছিলেন সুতপার বাবা। সেখানে তিনি সুতপা-হত্যার তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদের। ঘটনাচক্রে দিন কয়েক আগেই নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সুশান্ত এবং সুতপার কিছু ছবি। এই প্রসঙ্গে উঠে আসে সুশান্ত এবং সুতপার ‘সম্পর্ক’ কতটা গভীর ছিল সেই প্রশ্ন। সেই ছবি যে ‘আসল’ তা স্বীকার করে নেন সুতপার বাবা। স্বাধীন বলেন, ‘‘আমার মেয়ে এবং ওই ছেলেটির যে ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তা বহু পুরনো।’’ এই প্রসঙ্গেই ‘বছর তিনেক’ শব্দবন্ধটি উল্লেখ করেছেন স্বাধীন। যদিও সুশান্ত এবং সুতপার ওই ছবিগুলি বছর তিনেক আগের কি না তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। স্বাধীন আরও বলেন, ‘‘তখন ওদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল, সেই সময়কার ছবি। বছর দেড়েক আগে ওই সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেই ছবিই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার মেয়ে ওর থেকে মুক্তি চাইছিল। কারণ, ছেলেটির ব্যবহার-আচরণ আমার মেয়ের কাছে ভাল লাগত না। তাই সে সম্পর্ক ছিন্ন করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি দেখা যাচ্ছে তা বহু পুরনো।’’
স্বাধীন জানিয়েছেন, তিনি থানায় এসেছিলেন তাঁর মেয়ের হত্যার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে। তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। স্বাধীনের কথায়, ‘‘তদন্ত প্রায় শেষের দিকে বলেই তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন। মেসে রাখা মেয়ের ব্যবহার করা জিনিসপত্র আমি নিয়ে গেলাম। তাই থানায় আসা। প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া গিয়েছে কি না সে বিষয়ে কথা হয়নি। তা জানার চেষ্টা করব।’’
সুশান্ত দাবি করেছিল, তার উপর মানসিক অত্যাচার চালিয়েছিলেন সুতপার মা এবং বাবা। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে স্বাধীনের জবাব, ‘‘ওকে মানসিক ভাবে অত্যাচারের কোনও প্রশ্নই আসে না। ওর সঙ্গে রাস্তাঘাটে দেখাও হত না। আর ওই রকম ছেলের সঙ্গে কথা বলার রুচিও হত না। এই দাবি সর্বৈব মিথ্যা। এখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য সুশান্ত এ সব কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলছে।’’ তদন্তে সুশান্ত এক ‘সোর্স’-এর কথা জানিয়েছিল পুলিশকে। সুতপার সেই বান্ধবীকে কাজে লাগিয়ে তাঁর সম্পর্কে যাবতীয় খবরাখবরও পেত সুশান্ত। স্বাধীনের বক্তব্য, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি সেই বান্ধবী কে। আমার মেয়ে ওকে বার বার নিষেধও করেছিল যে, ‘আমার তথ্য কেন দিচ্ছ তুমি?’ ওই মেয়েটি এবং সুশান্তের মধ্যে কিছু অডিয়ো রেকর্ডিংও আমি পেয়েছি। তা তদন্তকারী আধিকারিককে পাঠিয়েছি।’’ সুতপার সেই বান্ধবীর পরিচয়ও জানা গিয়েছে বলে দাবি করেন স্বাধীন।
মেয়ের কথা বলতে গিয়ে সোমবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন স্বাধীন। তিনি বলেন, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত। আমি ফাঁসি চাই সুশান্তের। এই হত্যা ক্ষমার অযোগ্য। নিরীহ মেয়েকে খুন করা হয়েছে। আমার আবেদন, ওর দ্রুত ফাঁসি হোক। এই শাস্তি যেন উদাহরণ হয়ে থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy