নজরে নবান্ন লাইভ: সোমবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক জুনিয়র ডাক্তার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
এক দিকে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ। অন্য দিকে, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক। ফলে সোমবারেও ভোগান্তির সঙ্গে সঙ্গেই প্রকট হয়ে উঠল জট কাটার সম্ভাবনাও।
তবে রবিবারের মতো সোমবারেও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা জরুরি বিভাগের কাছে ‘পরিষেবা কেন্দ্র’ চালু রেখেছিলেন। এ দিনও তাঁরা ধর্না মঞ্চ থেকে পালা করে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা করেছেন।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ চালু ছিল। লোকজন এখান থেকে জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন।’’
বহরমপুরের বেসরকারি হাসপাতালের ডিরেক্টর বিজয়কুমার গুলগুলিয়া বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে আইএমএ জরুরি বাদে সব পরিষেবা বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছিল। সেই মতো আমরা এ দিন শুধু জরুরি পরিষেবা চালু রেখেছিলাম।’’
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মনস্তাত্ত্বিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জেলার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এনআরএস কাণ্ডের জেরে দেশ জুড়ে আইএমএ যে ধর্মঘট ডেকেছিল তাতে মুর্শিদাবাদও শামিল হয়েছিল। সরকারি বেসরকারি সমস্ত ক্ষেত্রে জরুরি পরিষেবা ছাড়া অন্য পরিষেবা বন্ধ ছিল। এ দিন চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসও বন্ধ রেখেছিলেন।’’
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা ভবনে (অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে) সভাগৃহে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছে। সেখানে কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দোপাধ্যায়, এমএসভিপি দেবদাস সাহা, বিভাগীয় প্রধানদের পাশাপাশি সিনিয়র চিকিৎসক অধ্যাপকেরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ঠিক হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ফাঁড়ি করার জন্য জেলা পুলিশকে প্রস্তাব দেওয়া হবে। বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী বাড়ানোর বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরে আগেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেই বিষয়টি তদারকি করার পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বরে পার্কিং-লটের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার ঠিক মতো কাজ করছেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে। পার্কিং-লটের বাইরে যাতে কোনও যানবাহন না থাকে সে বিষয়ে ফের ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালের ভিতরে যে সব দোকান বসছে সেগুলি তুলে দেওয়ার জন্য পুলিশকে জানানো হবে বলেও ঠিক হয়েছে। রোগীর বাড়ি লোকজন যাতে ওয়ার্ডের ভিতরে কম ঢোকেন সে দিকেও নজর দেওয়ার কথা হয়েছে।
৩৩ একর জমি নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল হাসপাতাল চত্বর রয়েছে। এ ছাড়া খাগড়ার পুরনো হাসপাতাল ভবনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সম্পত্তি। সেখানে প্রায় ৯ একর এলাকা রয়েছে। এত সম্পত্তি দেখার জন্য মাত্র ১০৫ জন বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মী রয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে একটি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। পুলিশ ক্যাম্পের পরিবর্তে সেখানে পুলিশ ফাঁড়ির প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠেছে এ দিনের বৈঠকে।
সূত্রের খবর, মোট ৪২ একর এলাকায় এই অল্প সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মীর পক্ষে দেখাও সম্ভব হয় না। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, যে সব বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন তাঁরাও ঠিক মতো কাজ করেন না। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ফাঁড়ি চালুর বিষয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হবে। বর্তমানে যে সব বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন তাঁদের দিয়ে কী ভাবে আরও ভাল কাজ করানো যায় তা দেখা হচ্ছে। রোগীদের পরিষেবার বিষয়টিও দেখা হবে।’’
অন্য দিকে, লালবাগ হাসপাতাল-সহ মহকুমার অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা এ ক’দিন স্বাভাবিকই ছিল। চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ পরে প্রতিবাদ জানিয়েও চিকিৎসা করেছেন। সোমবার তাঁরা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা-সহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দেন।
লালবাগের এসিএমওএইচ নীলাঞ্জন দস্তিদার বলেন, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে দাঁড়িয়েও কাজ করতে হয়েছে আমাদের। আমাদের সমস্ত দাবি লিখিত ভাবে মহকুমাশাসককে জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy