—ফাইল চিত্র
শীত নামার আগেই বেজে ওঠে বাজনা। গলা ছেড়ে শুরু হয় রেওয়াজ। আর সেই সঙ্গে একের পর এক বায়না শুরু হয় শিল্পীদের। তাদের অনুষ্ঠান ঘিরে উষ্ণতা বাড়ে গ্রাম বাংলায়। বাউল শিল্পী থেকে লোক গানের দল, আলকাপ থেকে যাত্রাপালা। এদের সকলের শীতের মরশুমে একের পর এক ডায়েরির পাতায় লেখা শুরু হয় কোথায় কবে অনুষ্ঠান। রাতের পর রাত জেগে নানা অনুষ্ঠান করে পেট চলে তাদের। অনেক শিল্পীই আছেন যারা মরসুমের এই সময়টায় কাজ করে সারাবছর পেট চালান। এবছর সে সব একেবারেই বন্ধ। ডায়েরির পাতা সব সাদা। এখনও পর্যন্ত কোনও শিল্পীর বায়না হয়নি কোনও অনুষ্ঠানের। ফলে পেটের টানে অন্য কোনও কাজ করতে হচ্ছে তাদের। কেবল পেটের টান নয়, গান তাঁদের মনের খোরাক জোগায়। ফলে পেটে ও মনে টান পড়েছে করোনা পরিস্থিতিতে।
বহরমপুরের একটি শিল্পী গোষ্ঠী কর্ণধার মনীষা মণ্ডল বলছেন, ‘‘অন্য বছর এই সময়টায় নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না আমাদের। কিন্তু এবছর একটা অনুষ্ঠানের বায়নাও এখনও পর্যন্ত হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই পেটের টানে অন্য কোনও কাজ করতে হচ্ছে আমাদের।’’
জেলার কান্দি এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পী বলছেন, "গানই আমার জীবন, কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সেটাকে পুরোপুরি কেড়ে নিয়েছে। এখন অনলাইনে শাড়ি বিক্রির কাজ করছি।’’ একই বক্তব্য জেলার লালগোলা এলাকার আলকাপ শিল্পী সালাম শেখের। তার দাবি, ‘‘কেবল মাত্র কয়েকটা সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া এ বছর আর কোনও অনুষ্ঠানের বায়না হয়নি আমাদের।’’
জেলার আজিমগঞ্জ এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পীর দাবি, "বছরের এই মরসুমে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে নাচ-গান করে লাখ কয়েক টাকা আয় হত আমাদের দলের। এবার বিহার ঝাড়খণ্ড থেকে দু একটি অনুষ্ঠানের বায়না এসেছে, কিন্তু তাতে যাতায়াতের খরচ উঠবে না।’’
তিনি বলেন শিল্পীদের আরও দাবি, যে দু-একটি অনুষ্ঠানের জন্য ফোন পাচ্ছে তারা তাতে অন্য বছরের থেকে অনেক কম টাকা দিতে চাইছে সংগঠকরা। ফলে যে দু'একটি অনুষ্ঠান হবে তা করেও খুব বেশি লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy