Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রাজীবের বাড়ি হামলা, দ্বন্দ্বের ছায়া তৃণমূলে

রাজীবের অভিযোগ, এই হামলায় তাঁর বাড়ির বেশ কয়েকটি জানলার কাচ ভেঙেছে। তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে কিছু জিনিসপত্রও লুটপাট করা হয়েছে। তাঁর দাবি, দিন দুয়েক আগে হরিণঘাটা শহর তৃণমূল সভাপতি পদে পরিবর্তন হয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র

—প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৪
Share: Save:

পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান রাজীব দালালের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হরিণঘাটা থানা এলাকায় তাঁর শিমহাটের বাড়ির সামনে বহু মহিলা জড়ো হন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাজীবের বাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক জন ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। তবে রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

রাজীবের অভিযোগ, এই হামলায় তাঁর বাড়ির বেশ কয়েকটি জানলার কাচ ভেঙেছে। তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে কিছু জিনিসপত্রও লুটপাট করা হয়েছে। তাঁর দাবি, দিন দুয়েক আগে হরিণঘাটা শহর তৃণমূল সভাপতি পদে পরিবর্তন হয়েছে। এ দিন তিনি নতুন সভাপতি দেবাশিস বসুর ডাকা সভায় যোগ দিতে হরিণঘাটা বাজারে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

রাজীব খোলাখুলি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার বাড়িতে এই হামলার পিছনে সদ্য অপসারিত শহর তৃণমূল সভাপতি উত্তম সাহা রয়েছেন। পুলিশ এসে সব দেখে গিয়েছে। প্রয়োজনে আমি উত্তমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব।’’ যদিও উত্তমের দাবি, এ দিন হামলার সময়ে তিনি জাগুলিতে কর্মতীর্থের মাঠে দলের কর্মীদের নিয়ে সভা করছিলেন। হামলার কথা শুনে ঘটনাস্থলে যান। তাঁর কথায়, ‘‘রাজীব আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আমি কেন লোকজনকে ওর বিরুদ্ধে খেপাতে যাব।’’

প্রত্যাশিত ভাবেই, এই ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন হরিণঘাটা শহর তৃণমূলের কর্মীরা। ২০১৫ সালে হরিণঘাটা পুরসভার গঠিত হলে রাজীব পুরপ্রঘধান হন। প্রথম থেকেই তিনি হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এক সময়ে উত্তম শহর সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন চঞ্চল। কিন্তু গত লোকসভা ভোটের ফল বার হওয়ার পরে পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যায়। ফল প্রকাশের দু’দিনের মাথায় রাজীবের জাগুলির কার্যালয়ে বিজেপির লোকজন হানা দেয়। ভাঙচুর ছাড়াও রাজীবের এক আত্মীয়কে মারধর করা হয়।

দলের বহু কাউন্সিলরও প্রকাশ্যে রাজীবের বিরোধিতা করতে থাকেন। কয়েক জন সরাসরি রাজীবকে তোপ দেগে বিজেপিতে যোগ দেন। এ দিকে চঞ্চল নিজের গ্রামীণ এলাকা সামাল দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। শহরের সংগঠনের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন উত্তম। পুরপ্রধানের পদ থেকে রাজীবকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

উত্তমের অনুগামীদের দাবি, এই মুহূর্তে বেশির ভাগ কাউন্সিলর উত্তমের সঙ্গে থাকলেও রাজীব নেই। রাজীব এখনও শহরের রাজনীতিতে ‘চঞ্চলদার লোক’ বলেই পরিচিত। এই অবস্থায় উত্তমকে সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে। ফলে অনেকেই মনে করছেন এই ঘটনার পিছনে রাজীবের ভূমিকা রয়েছে। রাজীব আর উত্তম দু’জনেই শিমহাটের বাসিন্দা। ওই এলাকার তৃণমূলের লোকজনের দাবি, উত্তম এখানে দশকের পর দশক ধরে রাজনীতি করছেন। রাজীব মাত্র কয়েক বছর আগে এই পাড়ায় বাড়ি করেছেন। উত্তমকে সভাপতির পদ থেকে সরানোর বিষয়টা তাঁদের অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের ধারণা, রাজীবের কারণেই এটা হয়েছে। আর তার ফলেই এই হামলা।

যদিও উত্তম বলছেন, ‘‘রাজীব তো লোকসভা ভোটের পর সব সময়ে আমার পিছনে ঘুরে বেড়াত। নানা কারণে তখন বহু লোক ওকে মারতে এসেছিল। আমি ওকে রক্ষা করেছি। আমি কাউকে ওর বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলিনি। তবে এটা ঠিক, বহু দিন ধরে রাজীবের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। এক সময় ও কথায়-কথায় লোকজনকে পেটাত। সে কারণে কিছু মানুষ স্বতঃফূর্ত ভাবে ওর বাড়িতে হামলা করে থাকতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rajeev Dalal Haringhata TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy