ছবি: সংগৃহীত
পাচারের গরু আদালতের নির্দেশে এখন যাচ্ছে গোশালায়। আর তাতেই যে পাচারকারীদের কপাল পুড়েছে তা মানছেন সুতির বিএসএফ জওয়ানেরাও। কিছু দিন আগেও আইনি বিধান ছিল, বিএসএফ বা পুলিশ যাদের হাতেই ধরা পড়ুক পাচারের গরু তা সরাসরি কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরে হস্তান্তরিত করতে হবে। শুল্ক দফতরের স্থানীয় অফিস তা নিলাম করবে।
কিন্তু দীর্ঘ দিন থেকেই অভিযোগ উঠছিল, পাচারের সেই গরুর নিলামের সময় বেনামে ফের পাচারকারীরাই কিনে নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায় একটি গোপালক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের অভিযোগ ছিল, পাচারের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশ ৩৭৯, ৪১১ ধারায় মামলা রুজুর পাশাপাশি পশু নির্যাতনের ধারাতেও মামলা রুজু করুক। তা হলে গোশালাগুলিতে স্থান পাবে সেই সব গরু। তা কোনও মতেই নিলাম করা যাবে না।
এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট পুলিশকে নির্দেশ দেয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে পশু নির্যাতন রোধের ধারায় মামলা রুজু করে গরু গোশালায় পাঠাতে হবে। শুল্ক দফতর সেই গরু নিলাম করতে পারবে না। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আইনজীবী মলয় গুপ্ত জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সুতি থানার পুলিশ পশু নির্যাতনের ধারা প্রয়োগ না করায় গরুগুলি নিলাম করে দেওয়া হচ্ছিল। এই ব্যবস্থা যাতে মেনে চলতে বাধ্য হয় পুলিশ তার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ-সহ জঙ্গিপুর আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
জঙ্গিপুর আদালতও বিভিন্ন মামলায় আটক করা কয়েকশো গরু তুলে দিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। সংস্থার অন্যতম কর্তা কবিতা জৈন জানান, সর্বশেষ আটক থাকা ৬৯৭টি গরু সুতি থেকে তাঁরা হাতে পেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের চারটি গোশালায় রাখা হয়েছে গরুগুলিকে।
জেলা পরিষদের এক প্রাক্তন সদস্য বলছেন, “গরু আসছিল ভিন্রাজ্য থেকে। তাতে যা খরচ হত তার চেয়েও সস্তায় পাচারকারীরা গরু কিনত নিলামে। তাই পাচার থামানো যাচ্ছিল না। এ বারে নিলাম বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে পাচারকারীরা।’’ তবুও সীমান্তের গ্রামগুলিতে এখনও ঘোরাফেরা করে বহু অচেনা মুখ। গরু নিয়ে তেমন সুবিধা করতে না পারলে ছোট জিনিস পাচার করছে তারা। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “নিলাম বন্ধ থাকায় গরু পাচারও প্রায় বন্ধই ছিল সুতিতে। গত কয়েক দিনে ফের গরু পাচারের চেষ্টা চলেছে। বিএসএফের পাশাপাশি পুলিশও নজরদারি বাড়িয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy