প্রতীকী ছবি।
বেশি সুদের কারণে ডাকঘরের একটি প্রকল্পে মাসে মাসে ৬০০ টাকা করে জমা করতেন তরুণ দাস। ১২ মে ৫ বছরের সেই জমা প্রকল্প ম্যাচিওর করেছে। অভিযোগ, এক মাস পেরিয়ে গেলেও হাতে পাননি সে টাকা। ওই দিনই ম্যাচিওর করেছে সুপ্রিয় দাসের একটি জমা প্রকল্পও। পাওয়ার কথা প্রায় ৪৩ হাজার টাকা। অভিযোগ, মেলেনি তাঁর টাকাও। ১৫ জুন ম্যাচিওর করেছে জলঙ্গাপাড়া গ্রামের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সুপ্রকাশ দাসের প্রকল্পের অ্যাকাউন্টটিও। পাওয়ার কথা প্রায় ৭৩ হাজার টাকা। কবে পাবেন সে টাকা, জানেন না তিনিও।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও টাকা না মেলার অভিযোগ জঙ্গিপুর ব্যারাজ ডাকঘরের বিরুদ্ধে বহু দিনের। এমনকি কিছুদিন আগে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগও উঠেছিল এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
এই অবস্থায় গত দু’সপ্তাহ থেকে বাজ পড়ে কম্পিউটার বিকল হওয়ায় সমস্ত কাজই বন্ধ হয়ে রয়েছে ওই ডাকঘরে। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে এলাকার গ্রাহকদের।
জঙ্গিপুর ব্যারাজ ডাকঘরটি বিভিন্ন জমা প্রকল্পে জেলার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ডাকঘর। সঞ্চয় প্রকল্পের প্রথম সারিতে রয়েছে এই ডাকঘর। বংশবাটী, হারোয়া, আহিরণ, সেকেন্দ্রা, গিরিয়া, সাদিকপুর, নুরপুর, কানুপুর পঞ্চায়েতের প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে এই উপ ডাকঘরে। সুতি ১ ব্লকের কৃষি প্রধান এই এলাকায় চাকরিজীবীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কাছে পিঠে ব্যাঙ্কও নেই। ব্যাঙ্কে সুদের হারও কম। তাই সঞ্চয় প্রকল্পে জঙ্গিপুর ব্যারাজ ডাকঘরে গ্রাহকদের চাপ রয়েছে যথেষ্ট।
গ্রাহক সুপ্রিয় দাস বলছেন, “একটি বড় সাব পোস্ট অফিস এটি। অথচ একটি মাত্র ছোট্ট ঘর, যেখানে পা রাখার জায়গা নেই। একফালি বারান্দা তাও নির্মাণ সামগ্রীতে ঠাসা। সামনে বালি, পাথরে এতটাই অবরুদ্ধ যে ডাকঘরে ঢুকতে যথেষ্ট কসরত করতে হয়। এত গ্রাহক থাকা সত্ত্বেও এই ডাকঘরকে ‘কোর ব্যাঙ্কিং সলিউশন’য়ের (সিবিএস) নেট ব্যাঙ্কিংয়ে আনা হয়নি। যার ফলেই এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। এক মাস আগে ম্যাচিউর করেও টাকা পেতে ঘুরতে হচ্ছে। করোনার সময়। ব্যবসায় মন্দা। সময়ে টাকাটা পেলে সুবিধে হত। কিন্তু তা বুঝছে কে?”
তরুণ দাস বলছেন, “পাশেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, বাঙাবাড়ি হাইস্কুল। সকলেই তাদের ক্যাম্পাসে ডাকঘরের জন্য ঘর ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু ডাকঘর সরানো হচ্ছে না ভাড়া বাড়ি থেকে।”
ডাকঘরের এক এজেন্ট বলছেন, “বর্তমান ডাকঘর লাগোয়া রয়েছে একটি বৈদ্যুতিক ট্রাসফর্মার। প্রায় প্রতিবছরই একবার করে বাজ পড়ে তাই বিকল হয় কম্পিউটার। এবারও ৭ জুন বাজ পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে কম্পিউটারের মাদার বোর্ড। তা সারানো হয়নি দু সপ্তাহেও। ফলে সমস্ত রকম লেনদেন বন্ধ হয়ে রয়েছে এই ডাকঘরে।”
পোস্ট মাস্টার নিমাই দত্ত বলছেন, “মাস খানেক হল এসেছি। কিন্তু ম্যাচিওরিটির টাকা পাননি, এমন ঘটনা আমার জানা নাই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তবে ৭ জুন বাজ পড়ার পর থেকে ডাকঘরের সব কাজ বন্ধ হয়ে আছে। আমরা জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কিছু হয়নি।”
রঘুনাথগঞ্জের পোস্টাল ইন্সপেক্টর আশিস দাস বলছেন, “মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও টাকা না পাওয়ার তো কথা নয়। সোমবারই আমি ওই ডাকঘরে গিয়ে অবশ্যই গ্রাহকদের ডেকে তাদের ম্যাচিউরিটি হয়ে থাকলে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy