(বাঁ দিকে) ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার কালীঘাটের ‘কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে আদালতে হাজির করানোর জন্য আবেদন করল সিবিআই। একই সঙ্গে হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আদালতে হাজির করানোর আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সিবিআই বিশেষ আদালতে তাঁদের হাজির করানো হবে। সেখানে তদন্তের স্বার্থে ওই দু’জনকে হেফাজতে চাইতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি সুজয়কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। ‘কাকু’ ছাড়াও নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার হওয়া শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত হুগলির ব্যবসায়ী অয়ন শীলকেও। এর পরেই গত ১ অক্টোবর নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় নতুন করে গ্রেফতার (শোন অ্যারেস্ট) করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বিকাশভবনে তল্লাশি চালিয়েও বেশ কিছু তথ্য হাতে আসে সিবিআইয়ের। সোমবার আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের দাবি, নিয়োগকাণ্ডে তদন্ত এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে। তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, ‘কাকু’ এবং শান্তনুকে জেরা করে এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া যেতে পারে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্যই হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে সিবিআই। সোমবার সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে সিবিআই বিশেষ আদালতে।
সোমবারই পার্থ-‘ঘনিষ্ঠ’ এজেন্ট সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। অভিযোগ, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি ‘এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন। সন্তু রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের বিধানসভা এলাকা বেহালার বাসিন্দা। একটা সময়ে তৃণমূলের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। সন্তুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ‘কালীঘাটের কাকু’, হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিয়োগকাণ্ডে অভিযুক্ত হুগলির ব্যবসায়ী অয়ন শীলেরও। সেই আবহেই এ বার সুজয়কৃষ্ণ ও শান্তনুকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করল সিবিআই।
বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে গত বছর মে মাসে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। নিজাম প্যালেসে ডেকে তাঁকে জেরাও করা হয়। ২০২৩ সালের ৩০ মে প্রায় ১১ ঘণ্টা জেরার পর সুজয়কে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতার হওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। মাঝে একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচারও হয়েছিল তাঁর। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়েও টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। এর পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি আচমকাই জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার পর ফের এসএসকেএমে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। এ বার তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, সোমবারই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। সোমবার কলকাতার বিচার ভবন তাঁকে জামিন দিয়েছে। ২০২২ সালের ২৩ জুলাই দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর পার্থ ও অর্পিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তবে অর্পিতা জামিন পেলেও এখনও প্রেসিডেন্সি জেলেই বন্দি রয়েছেন পার্থ। ইডির পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইও অভিযোগ আনে। দুই মামলাই এখনও বিচারাধীন। ইতিমধ্যে বহু বার জামিনের আবেদনও করেছেন পার্থ। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy