হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছিল মেয়েটি। —‘‘কাকলিদির বিয়ে হয়ে যাবে!’’
নাজিরপুর সারদা বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে কাকলি বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার তারই স্কুলের একটি নিচু ক্লাসের মেয়ে এসে খবর দেয়, কাকলির বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। পাত্র করিমপুরের। বেশি দেরি করবে না তারা। সামনেই বিয়ে।
বৃহস্পতিবার তেহট্টের নাজিরপুরের মহিসাখোলা গ্রামের ঘটনা। খবর পেয়ে দুপুরেই করিমপুর থানার মহিসাখোলা গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে যায় স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির সদস্যেরা। আটকায় বিয়ে।
প্রথমে অবশ্য বিয়ের কথা স্বীকারই করতে চায়নি মেয়েটির বাড়ির লোকজন। স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির প্রত্যেকে বোঝাতে থাকেন, অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। এতে কী কী সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে ভবিষ্যতে। কম বয়সে মেয়েকে বিয়ে না দিয়ে স্কুলে পাঠান। বারবার ‘না’ বলে গেলেও শেষে চাপের মুখে ভেঙে পড়ে ছাত্রীর বাবা গজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। স্বীকার করে নেন, আগামী ৯ বৈশাখ বিয়ের দিন স্থির হয়েছে।
কমিটির সদস্য ও নাজিরপুর ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে দেরি না করে সকলে মিলে যান তাঁরা। পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বিয়ে আটকানো গিয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘দেরি হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রী, দু’পক্ষই মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। বিয়ের প্রস্তুতিতে অনেক খরচ করে ফেলেন।’’
তেহট্টের মহকুমাশাসক সুধীর কোন্তম বলেন, ‘‘এক মাস আগে ওই স্কুলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে স্বয়ংসিদ্ধা কমিটি তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যেই তিন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হল এই কমিটি।’’
তাঁর কথায়, ‘‘নাজিরপুর সারদা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সামিল করে নাবালিকা বিয়ে বন্ধের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ছাত্রীদের মধ্যে নাবালিকা বিয়ের কুফল কিংবা কাজের নাম করে নিয়ে গিয়ে নারী-পাচারের কুফল সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারের ফলেই এই কাজ সম্ভব হয়েছে। বাহবা দিতেই হয়। দারুণ কাজ করছে ওরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy