Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
সাত দিন বন্ধ থাকার পরে

পদ্মায় নামতেই ইলিশের বন্যা

সপ্তাহ খানেক আগে, শিরচরের কয়েক জন মৎস্যজীবী জলরেখা ভুলে মাঝ পদ্মা থেকে ভেসে গিয়েছিলেন বাংলাদাশের চারঘাটে। সীমানা লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি তাঁদের আটক করে। এ ঘটনা নতুন নয়। বিএসএফ ওই তিন ধীবরকে পতাকা-বৈঠক করে ছাড়িয়ে আনতে রওনা দেয়।

প্রায় সাত দিন পরে পদ্মায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠল। প্রতীকী ছবি।

প্রায় সাত দিন পরে পদ্মায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠল। প্রতীকী ছবি।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
 কাকমারি চর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি, বিকেলের পদ্মাপাড়ে কার্তিকের মাসেই যেম মাঘের শীত। হাড় হিম করা হাওয়ায় কাঁপতে কাঁপতে শুক্রবারের দুপুরে তখন পদ্মা থেকে ইলিশের ঝাঁকা নিয়ে সার দিয়ে ফিরছেন মৎস্যজীবীরা। জলে ভিজে কাক, ঠান্ডায় চামড়া কুঁকড়ে গেলেও ধীবরদের মুখে হাসি।

প্রায় সাত দিন পরে পদ্মায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠল এবং প্রথম দিনেই তাঁদের জালে পড়েছে প্রচুর ইলিশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘সুদিন ফিরল মনে হচ্ছে, আমাদের ঝাঁকা ভরে দিয়েছে পদ্মা, অনেক দিন পরে মাছ ধরতে পেরে ভাল লাগছে খুব।’’

সপ্তাহ খানেক আগে, শিরচরের কয়েক জন মৎস্যজীবী জলরেখা ভুলে মাঝ পদ্মা থেকে ভেসে গিয়েছিলেন বাংলাদাশের চারঘাটে। সীমানা লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি তাঁদের আটক করে। এ ঘটনা নতুন নয়। বিএসএফ ওই তিন ধীবরকে পতাকা-বৈঠক করে ছাড়িয়ে আনতে রওনা দেয়।

কিন্তু চারঘাটে পৌঁছলে বিএসএফের ওই জওয়ানদের সঙ্গে আচমকা বাদানুবাদ শুরু হয় বিজিবি-র। অভিযোগ, তার পরেই বিজিবি গুলি চালাতে থাকে। সেই গুলিতেই ঝাঁঝরা হয়ে যায় বিএসএফের স্পিড বোটটি। মারা যান এক বিএসএফ জওয়ান। গুরুতর জখম হন আরও এক জন।

ওই ঘটনার পরে ছেড়ে দেওয়া তো দূরের কথা, শিরচরের আটক মৎস্যজীবী প্রণব মণ্ডলকে বিজিবি অনুপ্রবেশের অভিয়োগে তুলে দেয় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে। ওই ঘটনার পরেই পদ্মায় ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মাছ ধরা বন্ধ করে দেয় বিএসএফ। সাত দিন বন্ধ থাকার পরে এ দিন ফের অনুমতি মেলে পদ্মায় মাছ ধরার।

এ দিন ওই ঝোড়ো হাওয়ার মধ্যেই, মহকুমা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে চার জনের একটি ফরেন্সিক দল কাকমারি সীমান্তের পদ্মা পাড়ে হাজির হয়। বিজিবির গুলিতে ক্ষতবিক্ষত স্পিডবোটটি খুঁটিয়ে দেখেন ওই দলের সদস্যেরা। প্রায় তিরিশ মিনিট ধরে সেটি পরীক্ষা করে সন্ধ্যা নাগাদ কাকমারি বিএসএফ ক্যাম্প থেকে ওই দলটি ফিরে যায় বহরমপুরে।

পুলিশ জানায়, ফরেন্সিক তদন্তে নেমে তারা বিএসএফ বোটটি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে। বিজিবির তরফ থেকে যে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি উড়ে এসেছিল তার প্রমাণও মিলেছে। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্তারা জানান, অন্তত সতেরো জায়গায় গুলি লেগেছে বোটটির গায়ে।

বিএসএফের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিজিবি প্রথম থেকেই আমাদের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ তুললেও কোনও তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি। কিন্তু আমাদের এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে তাদের গুলিতে, জখম হয়েছে আরও এক জন। বোটের চেহারাও বলে দিচ্ছে কী ভাবে গুলি চালিয়েছে বিজিবি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa Fish Padma River BSF Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE