প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে মেরে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুরন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ও তাঁর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার রাতে কান্দি থানার পার্ব্বতীপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মৃতার নাম ফাল্গুনী রাজবংশী (২৩)। তাঁর বাবা জামাই গৌরহরি রাজবংশী-সহ চার জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে রণগ্রামের ফাল্গুনীর বিয়ে হয়েছিল পার্বতীপুরের গৌরহরির সঙ্গে। ফাল্গুনীর বাবা নন্দদুলাল রাজবংশীর অভিযোগ, বিয়ের সময়েই তাঁরা গয়না ইত্যাদি মেয়েকে দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস পর থেকেই ফাল্গুনীকে ফের বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে। মারধরও শুরু হয়।
বিয়ের পরেই পঞ্চায়েতের সদস্য হন গৌরহরি। ফাল্গুনীর বাপের বাড়ির অভিযোগ, তার পরে জামাইয়ের জুলুম আরও বাড়ে। কিছু দিন যাবৎ এক লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য মারধর করা হচ্ছিল ফাল্গুনীকে। কিন্তু নন্দদুলালের নুন আনতে ফুরোয়। মেয়ে কষ্ট পাচ্ছে জেনেও তিনি কিছু করতে পারেননি।
নন্দদুলালের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তাঁর মেয়েকে মারধর করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন করা হয়। তার পর গলায় ফাঁস দিয়ে মৃতদেহ টাঙিয়ে দিয়ে বাড়ির সকলে পালায়। মাঝরাতে পড়শিদের কাছ থেকে মেয়ের ‘অসুস্থতা’র খবর পেয়ে তাঁরা রণগ্রামে গিয়ে দেখেন, ফাল্গুনীর নিথর দেহ পড়ে আছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছে।
বুধবার সকালে নন্দদুলাল কান্দি থানায় গৌরহরি, তাঁর দুই দাদা সঞ্জয় ও চন্দ্র এবং মা কাজল রাজবংশীর নামে খুনের অভিযোগ দায়ের। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘টাকার জন্য ওরা মেয়েকে খুন করে ফেলবে, এটা আমি কল্পনা করতেও পারিনি। আমি ওদের শাস্তি চাই। ওরা যেন ছাড় না পায়।’’ ঘটনার পরে গোটা একটা দিন পেরিয়ে গেলেও অবশ্য কান্দি থানার পুলিশ অন্ধকারেই হাতড়ে বেড়াচ্ছে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও যদি কারও বিরুদ্ধে পণের জন্য স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ ওঠে, তবে জনপ্রতিনিধিদের উপরে মানুষের ভরসা কী করে থাকবে, সেই প্রশ্ন স্বভাবতই উঠছে। কান্দি মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরাই আমাদের সঙ্গে পণপ্রথার বিরুদ্ধে কাজ করেন। তাঁরা যদি নির্যাতন বা খুনে অভিযুক্ত হন, অন্যদের শোধরাবেন কী করে?”
তৃণমূল নেতারা আপাতত ওই পঞ্চায়েত সদস্যের দায় ঝাড়তে ব্যস্ত। কান্দি ব্লক তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, “এখন শুনছি, গৌরহরি তার স্ত্রীকে মারধর করত। খবরটা আগে জানলে কিছু একটা ব্যবস্থা করতাম। ও আমাদের দলের হলেও এই ধরনের কাজ দল সমর্থন করেনা। আইন আইনের মতোই চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy