মৃত অশোক ডোমের স্ত্রী ও দুই মেয়ে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
সাপের কষ্টে যার মন কাঁদে, সে-ই কিনা মানুষ কুপিয়ে খুন করল! কথাটা যেন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না ধুবুলিয়ার বহু মানুষ।
সোমবার রাতে ধুবুলিয়ায় খুনের ঘটনায় ধৃত দেবাশিস সেনকে সবাই চেনেন সাপের উদ্ধারকর্তা হিসাবে। কোথাও কোনও সাপ আহত হয়েছে বলে খবর পেলেই ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে তাকে। আহত সাপকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে বাড়িতে। সেটিকে শুশ্রূষা করে সুস্থ করে ছেড়ে দিয়ে এসেছে কখনও বাহাদুরপুর ফরেস্টে, কখনও বা বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যে। সাপের উপর একাধিক বইও লিখেছে বছর চল্লিশের ওই যুবক। এমন এক জন লোক কেন, কোন পরিস্থিতিতে কাউকে কুপিয়ে খুন করতে যাবে তা নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছে এলাকায়।
প্রার্থমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দেবাশিসের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী। ধুবুলিয়া যক্ষ্মা হাসপাতাল আবাসনে তাঁরা থাকতেন। বছর পাঁচ আগে ধুবুলিয়া থানার পাশে বাড়ি করে চলে গিয়েছেন। তবে আবাসনের ঘর নিজেদের দখলেই রেখেছিলেন। সম্প্রতি তাঁরা সেই আবাসনে গিয়ে বেশ কিছু দিন থেকেও এসেছেন। আবাসন ছেড়ে চলে এসেও মাঝে মধ্যে সেখানে গিয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসত দেবাশিস। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই আবাসনেরই এক স্বাস্থ্যকর্মীর ছেলের জন্মদিনের নিমন্ত্রণে যায় দেবাশিস। তার পরেই ঘটনাটি ঘটে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যায় মদ খেয়ে বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী আর ছেলেকে গালিগালাজ করছিলেন অশোক ডোম (৫২)। পরিস্থিতি মাত্রাছাড়া হওয়ায় দেবাশিস গিয়ে অশোককে থামতে বলে। এই নিয়ে বচসার সময়ে অশোকের ছেলে অমর ও পরিবারের অন্যেরা দেবাশিসের উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে এবং তখনই দেবাশিস ঘর থেকে দা বার করে এনে এলোপাথাড়ি চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। প্রথমে আহত হয় অমর। দায়ের কোপে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অশোকের। এর পর দেবাশিসকে ধরে বেধড়ক মার শুরু হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ধুবুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অমর ও দেবাশিস দু’জনকেই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দেবাশিসকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা, ধুবুলিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য পরিতোষ দাস বলেন, “দেবাশিসকে দীর্ঘদিন ধরে দেখছি। কখনও কারও সঙ্গে বিবাদে জড়াতে দেখিনি। সামান্য সাপের জন্য যার প্রাণ কাঁদে সে কিনা মানুষ খুন করেছে? বিশ্বাস করাই কঠিন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy