ছবি: সংগৃহীত
এক সময়ে জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ব্যবহার করে সব বাড়িতে সস্তায় শৌচাগার তৈরি করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। ২০১৩ সাল নাগাদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে কোন কোন বাড়িতে শৌচাগার নেই, সে ব্যাপারে সমীক্ষা করানো হয়।
পরে জেলা পরিষদ দাবি করেছিল, বছর দেড়েকের মধ্যে প্রায় আড়াই লক্ষ শৌচাগার তৈরি হয়েছে। সে কাজের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী নদিয়াকে ‘নির্মল জেলা’ হিসাবে ঘোষণা করেন।
এ বার সেই নির্মল জেলার সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৪৬ হাজার পরিবারের শৌচাগার নেই। এ বার ওই পরিবারগুলিকে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, জেলা নির্মল ঘোষণা হওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে, বহু পরিবারের শৌচাগার নেই। আসলে যত দিন যাচ্ছে, ততই ভাঙছে পরিবার। আগে হয়তো একই পরিবারে দুই ভাই বাস করতেন। বিয়ের পর দু’জনেই আলাদা সংসার পেতেছেন। ফলে, একটা শৌচাগার দুই পরিবার ব্যবহার করতে পারছেন না। আবার, সবার শৌচাগার নাম দিয়ে যখন শৌচাগার তৈরিতে জেলা উঠেপড়ে লেগেছিল, তখন তাড়াহুড়োয় অনেক পরিবারকে ৯০০ টাকা করে দেওয়া সত্ত্বেও তারা শৌচাগার পায়নি। শৌচাগার বানানোর আগেই জেলা নির্মল ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শৌচাগার তৈরির কাজ।
এ বার সব পরিবারকে নিয়েই সমীক্ষা করা হয়েছে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ওই সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে সেই তালিকা ইতিমধ্যেই জেলায় চলে এসেছে বলে জানা যাচ্ছে। বলা হয়েছে, বাদ পড়া উপভোক্তাদের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ শোচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে।
জেলা পরিষদের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এ বার পঞ্চায়েতগুলি বাদ পড়ার তালিকা দেওয়ার পর রীতিমতো লিখিত ভাবে জানিয়েছে, এর পর গ্রামের সব বাড়িতেই শৌচাগার থাকবে।’’ এর জন্য ইতিমধ্যেই স্যানিটারি মার্ট চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। এমনকি, শৌচাগার তৈরির জন্য তিন দিনের একটি রাজমিস্ত্রির প্রশিক্ষণও কৃষ্ণগঞ্জে শেষ হয়ে গিয়েছে।
তেহট্ট-১ ব্লকের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এ বার ১০ হাজার ৯০০ টাকার ওই সব শৌচাগার তৈরি হবে। উপভোক্তাকে দিতে হবে মাত্র ৯০০ টাকা। বাকি টাকা আসবে বিশ্বব্যাঙ্কের তহবিল থেকে।
নদিয়া জেলা পরিষদের জল ও স্বাস্থ্য বিধান শাখার সমন্বয়কারী শিবেন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নিয়মের অনেক বদল হয়েছে এ বার। কাজ শেষ করতে হবে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। কাজ শেষ করে ছবি তুলে পাঠানোর পরেই মিলবে টাকা। ফলে, আগে থেকে টাকা নিয়ে কাজ করতে কেউ ঢিলেমি করতে পারবেন না।’’
কল্যাণীর কাঁচরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের পঙ্কজ সিংহ বলছেন, ‘‘আমার পঞ্চায়েত এলাকাতেও কিছু পরিবারের শৌচাগার নেই। এ বার তাঁরা শৌচাগার পাবেন বলে মনে হচ্ছে।’’ তবে জেলার অনেক স্যানিটারি মার্টের কর্তারা জানাচ্ছেন, মাত্র এক মাসের মধ্যে এত শৌচাগার তৈরি করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, ঠিকাদারদের বহু টাকা রয়েছে। কিন্তু মার্ট বা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা যাঁরা এই কাজে যুক্ত থাকবেন, তাঁদের আর্থিক সামর্থ্য খুব বেশি নয়। এ দিকে কাজ চলাকালীন কোনও টাকা মিলবে না। ফলে, দ্রুত টাকা জোগাড় করে এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা মুশকিল হতে পারে।
শিবেনবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy