হাঁসখালিতে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ পঞ্চাশোর্ধের বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।
আবার নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ উঠল নদিয়ার হাঁসখালিতে। রানাঘাট পুলিশ জেলার হাঁসখালি থানার দক্ষিণপাড়ার চাপড়ি গ্রামে ১০ বছরের এক নাবালিকাকে ৫৩ বছর বয়সি এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশে অভিযোগ দায়েরর পরেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকা এবং তাঁর মায়ের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ধৃতকেও হাজির করানো হয় আদালতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নাবালিকার মা গত ১০ অক্টোবর হাঁসখালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি দাবি করেন, গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ তাঁর ১০ বছরের শিশুকন্যাকে এক প্রতিবেশী ধর্ষণ করেন। ৮ অক্টোবর অন্য এক প্রতিবেশীকে সে দিনের ঘটনা জানায় নির্যাতিতা। তাঁর কাছেই ঘটনার কথা জানতে পেরে গত ১০ অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ করে নির্যাতিতার পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ নাবালিকার মা প্রতিবেশীর বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে একা ছিল নাবালিকা। রাত ৮টা নাগাদ মাকে ডাকতে ওই প্রতিবেশীর বাড়ির দিকে যায় নাবালিকা। অভিযোগ, তখনই পড়শি ওই প্রৌঢ় তাঁদের বাড়ির পাশের গলিতে নিয়ে গিয়ে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করেন। পুলিশে অভিযোগ জানাতে কেন দেরি হয়েছে, সে প্রসঙ্গে নির্যাতিতার টোটোচালক বাবা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত প্রভাবশালী লোক। ওঁর ভয়ে কিছু বলতে পারিনি।’’
হাঁসখালিতে নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বৃহস্পতিবার, নির্যাতিতার বাড়িতে যান রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত এলাকায় তৃণমূলকর্মী হিসাবে পরিচিত। বুধবার রাত থেকে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, সবাই মিলে ওই পরিবারকে টাকার বিনিময়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। নির্যাতিতার পরিবার দৃঢ়তার সঙ্গে আইনি লড়াই চালাচ্ছে। আমরা ওই পরিবারের পাশে আছি।’’
বিজেপি সাংসদের এই দাবি খারিজ করে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সমীর পোদ্দার বলেন, ‘‘অভিযুক্তের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। অযথা এ নিয়ে রাজনীতি না করাই ভাল। দোষী ব্যক্তির অবিলম্বে শাস্তি হোক এটা আমরাও চাই।’’
বিজেপি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ করেছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে রাজি নয় পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের দাবি, এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁর নামে অভিযোগ ছিল তাঁকে আমরা দ্রুত গ্রেফতার করেছি। অভিযোগকারিণী ও তাঁর মেয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আশা করছি, তদন্ত খুব দ্রুত গুটিয়ে ফেলতে পারব।’’ বৃহস্পতিবারই অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ৫ এপ্রিল এই হাঁসখালিতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমর গয়ালির ছেলে ব্রজ গয়ালি ও তাঁর দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে জন্মদিন উপলক্ষে মদ্যপানের আসরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে সে দিনই মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। প্রমাণ লোপাটের জন্য ওই কিশোরীর পরিবারের উপর দ্রুত সৎকার করার চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও করে নির্যাতিতার পরিবার। আদালতের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। এই মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy