শনাক্ত করা তদন্তকারীদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। —প্রতীকী চিত্র।
সাইবার প্রতারণার দৌলতে পুলিশের অভিধানে নতুন সংযোজন হয়েছে দু’টি শব্দ— ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ এবং ‘ই-সিম’। এই দুইয়ের উৎপাতে কার্যত ঘুম উড়েছে পুলিশের। কারণ সাইবার প্রতারক থেকে শুরু করে হ্যাকারেরা অনায়াসে এই দুই রাস্তায় অনায়াসে মানুষের সর্বস্ব লুট করে কার্যত পথে বসাতে শুরু করেছে।
অথচ ‘ই-সিম’ ব্যবহার করে যারা ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করার ভয় দেখিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লুট করছে তাদের শনাক্ত করা তদন্তকারীদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কারণ ‘ই-সিম’ ব্যবহার করা হলে শনাক্ত করা বা সাইবার অপরাধীর সূত্রসন্ধান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে বলে পুলিশের দাবি। আর সেই সুযোগ ব্যবহার করে সাইবার অপরাধের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
সেই অপরাধের ফাঁদে সাধারণ মানুষ যাতে পা না দেয় তার জন্য মোবাইলে কলার টিউনের মাধ্যমে লাগাতার প্রচার শুরু করেছে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সম্প্রতি কাউকে ফোন করলেই শোনা যাচ্ছে যে পুলিশ, সিবিআই বা বিচারকের নাম করে যদি কেউ ভিডিয়ো কল করে তা হলে ভয় না পেতে কারণ তারা সাইবার প্রতারক হতে পরে। অর্থাৎ গোটা দেশে এই অপরাথ এতটাই মাথাচাড়া দিয়েছে যে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে সরাসরি মাঠে নামতে হয়েছে।
দিন কয়েক আগে কৃষ্ণগঞ্জের চৌগাছা থেকে লিঙ্কন বিশ্বাস নামে এক বিজেপি নেতাকে কেরল পুলিশ এমনই সাইবার অপরাধ চক্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। কেরলের কোচিতে এ ভাবেই ভিডিয়ো কল মারফত এক প্রৌঢ়াকে প্রতারিত করে তাঁর দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে চার কোটিরও বেশি টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই টাকার একটি অংশ লিঙ্কন বিশ্বাসের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। শুধু তা-ই নয়, গোটা দেশে এরকম অন্তত ৫০টি সাইবার প্রতারণায় সে জড়িত বলে দাবি করেছে পুলিশ।
এ ভাবে ভিডিয়ো কল করে নিজেদের সিবিআই, ইডি বা বিচারক দাবি করে গ্রেফতারির ভয় দেখানোরই নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’। আর এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট করা হচ্ছে ই-সিমের মাধ্যমে।
ই-সিম আসলে কী?
পুলিশ জানিয়েছে, অনেক সময়েই ইন্টারনেট ব্যবহার করে একটি নম্বর তৈরি করে সেখান থেকে ফোন করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনও সিম কার্ডের প্রয়োজন হয় না। আবার একটি নির্দিষ্ট সংস্থার আই ফোন ব্যবহার করে সেই সংস্থার নিজস্ব অ্যাপের মাধ্যমেও ফোন করা যায়। এর জন্য সেই সংস্থার নিজস্ব সার্ভার ব্যবহার করা হয়। অন্য কেউ সেই সার্ভারে ঢুকতে পারে না। ফলে দু’টি ক্ষেত্রেই যারা ফোন করছে তাদের শনাক্তকরণ বা সূত্রসন্ধান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এক আধিকারিকের কথায়, “ই-সিম থেকে ফোন এলে তার সূত্রসন্ধান করা যায় না। এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে সাইবার প্রতারক বা অপরাধীরা। তাই অপরাধী পর্যন্ত পৌঁছনো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকের যথেষ্ট সতর্ক থাকা দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy