Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সীমান্ত থেকে ফিরল বেপাত্তা তরুণী

মাস ছয়েক আগে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম থেকে হঠাত্‌ই উধাও হয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। অনেক দড়ি টানাটানির পরে সোমবার তাকে নদিয়ার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হল। ইতিমধ্যে বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত পেরনোর দায়ে বাংলাদেশে ১৫ দিন জেল খাটতে হয়েছে বছর বিশেকের মেয়েটিকে। দু’পারে দুই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন ছুটোছুটি করে বেরিয়েছেন। অবশেষে যখন ফিরল, করিমপুর পান্নাদেবী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীটির মুখে খুশির ছাপ নেই। বরং থতমত ভাব আর চাপা ভয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নদিয়া শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৪
Share: Save:

মাস ছয়েক আগে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম থেকে হঠাত্‌ই উধাও হয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। অনেক দড়ি টানাটানির পরে সোমবার তাকে নদিয়ার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হল।

ইতিমধ্যে বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত পেরনোর দায়ে বাংলাদেশে ১৫ দিন জেল খাটতে হয়েছে বছর বিশেকের মেয়েটিকে। দু’পারে দুই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন ছুটোছুটি করে বেরিয়েছেন। অবশেষে যখন ফিরল, করিমপুর পান্নাদেবী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীটির মুখে খুশির ছাপ নেই। বরং থতমত ভাব আর চাপা ভয়।

সীমান্তের যে সব গ্রাম থেকে বাংলাদেশ কার্যত এ পাড়া-ও পাড়া, নদিয়ার মুরুটিয়া থানার ওই গ্রামটিও সেই তালিকায় পড়ে। পাশে মাথাভাঙা নদী। সেখানে স্নান করতে গিয়েই এক দিন উধাও হয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। নদীর ও পাশে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর। দু’পারে দু’দেশের মানুষ স্নান করতে আসেন। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, লুকিয়ে-চুরিয়ে পারাপারও চলে। সেই ভাবেই মেয়েটি এক দিন ও পারে চলে গিয়েছিল।

কেন চলে গেল?

গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, আমজাদ নামে ও পারের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তরুণীটির। তার টানেই সে চলে যায়। মেয়ে উধাও হওয়ার পরে তার বাড়ির লোকজন ও পারেও খোঁজ নিতে শুরু করেন। শোনা যায়, দৌলতপুরে এক বাড়িতে মেয়ে আছে। সেখানে তাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। এর পরে বাড়ির লোকজন মুরুটিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

সেই সঙ্গে পরিচিতদের মাধ্যমে বাংলাদেশে যোগাযোগ করে মেয়েকে ফেরানোর চেষ্টা চলতে থাকে।

বিষয়টি জেনে রাজ্যের এক মানবাধিকার সংস্থা সক্রিয় হয়। তারা যোগাযোগ করে বাংলাদেশের এক আইনি সহায়তা সংস্থার সঙ্গে। তারা আমজাদের বাড়িতে গিয়ে মেয়েটির সন্ধান পায়। পরে জিঞ্জাসাবাদের সময়ে সে দাবি করে, নদীতে স্নান করতে গেলে তাকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে এসে আটকে রাখা হয়েছে। উদ্ধার করে আনা হলেও আইন অনুযায়ী ১৫ দিন জেলে থাকতে হয় মেয়েটিকে।

এ দিন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জেল থেকেই মেয়েটিকে সীমান্তে এনে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেয়। পরে কৃষ্ণগঞ্জ থানায় পরিবারের লোকের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বাসের জন্য যখন সে কৃষ্ণগঞ্জ বাজারে দাঁড়িয়ে, তখনও তার মুখে অবসাদ আর অস্বস্তি। মেয়েকে ফিরে পেয়ে বাড়ির লোকজন খুশি, যদিও কেউ কিছু বলতে চাননি। মেয়েটিকেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি।

পাশে দাঁড়িয়ে তাদের এক প্রতিবেশী বলেন, “যে ভাবে মেয়েটাকে বাংলাদেশীরা তুলে নিয়ে দিয়েছিল, এত দিন আটকে রেখে দিয়েছিল, তাতে কি মন থেকে সহজে আতঙ্কে যায়? তা ছাড়া গ্রামের লোক কোন চোখে ব্যাপারটা দেখবে, সেটাও তো চিন্তার বিষয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

border missing girl nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE