কলেজ পত্রিকা প্রকাশ না করে ওই পত্রিকা খাতের অর্থ অন্য খাতে খরচ করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। গত কয়েক বছর ধরে বহরমপুর কলেজ ছাত্র সংসদ ছাত্র পরিষদের দখলে রয়েছে। অভিযোগ, ২০১২-১৩ সালের শিক্ষাবর্ষে কলেজ পত্রিকা প্রকাশের জন্য তৎকালীন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের রজত চট্টোপাধ্যায় সই করে ৮০ হাজার টাকা তুলে নেন। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের অজানা ছিল না। কিন্তু ওই ছাত্র সংগঠনের ‘চাপে’ কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে পারেননি বলেও অভিযোগ। ওই বিষয়-সহ ছাত্র সংসদের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে সম্প্রতি জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। তার পরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে এবং ওই অর্থ আদায়ে উদ্যোগী হয়। তৎকালীন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদককে ডেকে অবিলম্বে ওই অর্থ জমা করার নির্দেশ দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, ওই অর্থ জমা না করলে বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। তার পরেই গত শনিবার ওই ৮০ হাজার টাকা কলেজ খাতে জমা করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল বলেন, “ওই ৮০ হাজার টাকা গত শনিবার কলেজ খাতে জমা পড়েছে।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রাজা ঘোষ বলেন, “ওই শিক্ষাবর্ষে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার উপরে বাজেট হয়েছিল এবং কলেজ পত্রিকা খাতে খরচ ধরা হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা। সেই মতো তৎকালীন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের রজত চট্টোপাধ্যায় সই করে কলেজ থেকে ওই অর্থ তুলে নেয়। কিন্তু ওই শিক্ষা বর্ষে কোনও কলেজ পত্রিকা প্রকাশিত হয়নি। তাহলে ওই টাকা ছাত্রপরিষদ কোন খাতে খরচ করেছে তা আমরা স্মারকলিপি দিয়ে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে জানতে চেয়েছিলাম।” রাজাবাবুর অভিযোগ, “সাধারণ ছাত্রছাত্রীর টাকায় ছাত্র পরিষদ যে ফূর্তি করেছিল, কলেজে তারা ওই টাকা জমা করার মধ্যে দিয়েই প্রমাণ। ছাত্রছাত্রীদের কাছে মুখ রক্ষার জন্য ওই ৮০ হাজার টাকা জেলা কংগ্রেস কলেজে জমা করার জন্য ছাত্র পরিষদকে দিয়েছে বলেও জেনেছি।”
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই রজত চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে ওই কলেজের ভূগোল অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, “হস্টেলের সরস্বতী পুজো এবং পুজোর পরে প্রায় ৪ হাজার ছাত্রছাত্রীকে খাওয়ানো ছাড়াও সোশ্যাল অনুষ্ঠান, নবীন বরণ, বুক ব্যাঙ্ক, গেমস্, গরিব ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফর্ম পূরণের মতো বিষয়ে ওই পত্রিকা খাতের অর্থ খরচ হয়েছে। তবে পরে ওই অর্থ কলেজে জমা করে দেওয়া হয়েছে।” সেক্ষেত্রে ওই ৮০ হাজার টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন? রজতবাবুর কাছে সে প্রশ্নের অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি।
বহরমপুর কলেজের বর্তমান ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের বাপন দাসের দাদা ওই কলেজেরই তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অলিফ দাসও ছাত্র পরিষদের সক্রিয় কর্মী। তিনি অবশ্য বলেন, “জেলা কংগ্রেস পার্টি ফান্ড থেকে ওই ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।”
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সরফরাজ শেখ রুবেল বলেন, “তৎকালীন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ওই ৮০ হাজার টাকা কোথা থেকে পেলেন আমার জানা নেই। জেলা কংগ্রেস ফান্ড থেকে ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে কি না আমার জানা নেই। বিষয়টি জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলতে পারবেন।” অশোক দাস বলেন, “ওই অর্থের সঙ্গে জেলা কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ ছাত্র পরিষদের বিষয়ে জেলা কংগ্রেস কোনও ভাবে জড়িত নয়। ছাত্র পরিষদ তাদের নিজেদের ফান্ড থেকে ওই অর্থ মিটিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy