মাস খানেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৮৯ জন পুলিশকর্মীর বদলির নির্দেশ হয়েছিল। তখন জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী ঘোষ। তিনি সরে যেতেই নবান্ন-র নির্দেশে রদ হয়ে গেল ভারতী-জমানার বদলি।
জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, নবান্ন-র নির্দেশেই ওই ৮৯ জনকে ফের তাঁদের পুরনো পদে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন নতুন পুলিশ সুপার অলোক রাজোয়িরা। রবিবারই এই নির্দেশ জারি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে নির্দেশ কার্যকর হওয়ার কথা। সোমবার জেলার নতুন পুলিশ সুপার বলেন, “বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীর বদলি হয়েছে। এটা রুটিন বদলি।”
গত ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের পদ থেকে ভারতীকে বদলির নির্দেশ জারি হয়। কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলির ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দেন ভারতী। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ সম্বোধন করা, তৃণমূল সরকারের অতি-আস্থাভাজন এই পুলিশ আধিকারিক কেন কোপে পড়লেন, তা নিয়ে তারপর থেকেই জল্পনা চলছে। সেই জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে সবংয়ের বিজয় সমাবেশে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য। ভারতীর নাম না করেই শুভেন্দু বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের ঘর ভাঙার ক্ষেত্রে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের চেষ্টা ও সে ক্ষেত্রে প্রাক্তন পুলিশ সুপারের ভূমিকার জেরেই নবান্নের কোপে পড়েছেন ভারতী। এই পরিস্থিতিতে পুলিশে বদলির ক্ষেত্রে ভারতীর সিদ্ধান্ত বহাল রেখে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি নবান্ন।
জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, গত ২৩ নভেম্বর ওই ৮৯ জন পুলিশকর্মীকে বদলি করেছিলেন ভারতী। একাধিক মহলের দাবি ছিল, ৮৯ জনের বেশিরভাগকেই তাঁদের পছন্দের জায়গায় বদলি করা হয়েছিল। বদলির ওই নির্দেশ নিয়ে বিতর্কও বাধে। প্রশ্ন ওঠে, সবং বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন পর্বে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকেও কী করে তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ৮৯জন পুলিশকর্মীকে বদলি করলেন। ভারতীর ইস্তফার পরে তাই দ্রুত পট পরিবর্তন হয়। জেলা পুলিশের এক সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে ভারতীর পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নবান্নের নির্দেশে ভারতী-জমানার বদলি স্থগিত করা হয়।
ইতিমধ্যে ভারতী-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গড়বেতার ওসি হীরক বিশ্বাসকে পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করেছেন জেলার নতুন পুলিশ সুপার। ভারতী-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সন্তোষ মণ্ডলকেও উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়েছে। সন্তোষবাবু দীর্ঘদিন খড়্গপুরের এসডিপিও ছিলেন। পরে ঝাড়গ্রামের ডিএসপি (ডিইবি) হন। আগামী দিনেও ভারতীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কয়েকজন আইসি, ওসি-র বদলির সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলছে জেলার পুলিশ মহলে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের
মতে, ‘‘ভারতী-জমানা যে শেষ, একের পর এক নির্দেশে সেটাই স্পষ্ট করে দিচ্ছে নবান্ন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy