ফাইল চিত্র।
অতিমারি করোনার নাছোড় কামড় এমনিতেই রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বেহাল করে দিয়েছে। তার উপরে ঘূর্ণিঝড় আমপানের দৌরাত্ম্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কা কার্যত গোদের উপরে বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় এখন বড় কোনও প্রকল্পের পরিকল্পনা যাতে না-করা হয়, রাজ্য সরকার পূর্ত দফতরকে সেই নির্দেশ দিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। ওই দফতর সূত্রের খবর, প্রয়োজনের নিরিখে অগ্রাধিকার স্থির করে কাজ করা হবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। বাকিটা নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় সহায়তার উপরে। পূর্তকর্তাদের অনেকের ধারণা, বাজেটে দফতরের বরাদ্দ কাটছাঁট করা হতে পারে।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক পর্বে সম্প্রতি ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে পূর্ত দফতরের জন্য। এই অর্থে কিছু কাজকর্ম হবে দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায়। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, আমপানে দুই ২৪ পরগনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর গাছ পড়ে নষ্ট হয়েছে রাস্তা। আপাতত সেই সব রাস্তা পুনর্নির্মাণের পরিবর্তে সেখানে ক্ষত মেরামত (প্যাচ ওয়ার্ক) করবে দফতর। প্রাথমিক বরাদ্দের ১০০ কোটি টাকা কয়েকটি জেলার রাস্তা সারাইয়েই শেষ হয়ে যাবে। তার পরে কী ভাবে বরাদ্দ হবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে দফতরের অন্দরে। এক পূর্তকর্তা বলেন, “এই অর্থ এমনিতে খুব বেশি নয়। কিন্তু রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বুঝেশুনে খরচ করা প্রয়োজন।”
শুক্রবার দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক এবং আকাশপথে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখেছেন কেন্দ্রের পাঠানো আন্তর্মন্ত্রক দলের সদস্যেরা। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে একটা হিসেব কষবেন। সমান্তরাল ভাবে রাজ্যের কাছেও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, পরিকাঠামো খাতে ক্ষতিপূরণের তালিকা প্রস্তুত করছে নবান্ন। বাকি ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও তৈরি হয়েছে পৃথক ভাবে। তার ভিত্তিতেই টাকার দাবি জানাবে রাজ্য। সংশ্লিষ্ট শিবিরের অনুমান, পরিকাঠামো খাতে কেন্দ্রীয় ক্ষতিপূরণ-অনুদান মিললে বাকি কাজ করা যাবে। তবে সহায়তা কতটা মিলবে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত নন কেউই। এক পূর্তকর্তা বলেন, “আমপানে বিভিন্ন পরিকাঠামোর কিছু না কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে সেতু বা রেলওয়ে ওভারব্রিজে তেমন বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি। এটা আপাতত স্বস্তির ব্যাপার।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সেতু, হাসপাতাল এবং সড়ক পরিকাঠামোর সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। চালু প্রকল্পগুলির কাজও চলবে। শেষ বাজেট অধিবেশনে পূর্ত খাতে চলতি আর্থিক বছরের জন্য ৪৪০০ কোটি টাকা ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। নিয়মমাফিক কাজকর্ম ছাড়াও ১১টি জেলায় বিভিন্ন সড়ক প্রকল্প, আরওবি, সেতু, বিভিন্ন এক্সপ্রেসওয়ে এবং জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ ও সংস্কারের কাজ রয়েছে দফতরের হাতে। প্রশাসনিক ব্যাখ্যা, সাধারণ ভাবে একটি আর্থিক বছরের প্রতিটি ত্রৈমাসিকে প্রয়োজন অনুযায়ী মোট বাজেট-বরাদ্দের থেকে কিছু অংশ ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। ওয়াকিবহাল শিবিরের ধারণা, এ বার একমাত্র অপরিহার্য বা খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির জন্যই খরচের অনুমোদন মিলতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy