Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
Purnima Kandu death

পূর্ণিমার পেটে ক্ষতিকারক পদার্থ, খুনের আশঙ্কা

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পূর্ণিমাদেবীর পেটে ক্ষতিকারক পদার্থের অস্তিত্ব মিলেছে বলে ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।’’

(বাঁ দিকে) পূর্ণিমা কান্দু। তপন কান্দু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

(বাঁ দিকে) পূর্ণিমা কান্দু। তপন কান্দু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
ঝালদা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৪৯
Share: Save:

পুরুলিয়ার ঝালদায় নিহত কংগ্রেস পুর-প্রতিনিধি তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর মৃত্যুতে রহস্য আরও ঘনীভূত হল।

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পূর্ণিমাদেবীর পেটে ক্ষতিকারক পদার্থের অস্তিত্ব মিলেছে বলে ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।’’ এর পরেই পূর্ণিমার ছেলে দেব কান্দু আশঙ্কা প্রকাশ করেন, তাঁদের অনুপস্থিতিতে নবমীর রাতে কেউ বাড়িতে ঢুকে মাকে বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে খুন করতে পারে। তবে এখনই তাঁরা কোনও অভিযোগ দায়ের করছেন না। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।

২০২২ সালের ১৩ মার্চ ঝালদা শহরে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন তপন। হাই কোর্টে পূর্ণিমার আর্জির ভিত্তিতে মামলার তদন্তভার পায় সিবিআই। গ্রেফতার হন তপনের দাদা, ভাইপো-সহ সাত জন। ঘটনার পরে পূর্ণিমা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তায় দু’জন পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হলেও গত বছর তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। গত অগস্টে কলকাতা হাই কোর্ট থেকে দুই অভিযুক্ত শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়ে যান। এর পর হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে নিরাপত্তারক্ষী পুনর্বহালের আর্জি নিয়ে ১ অক্টোবর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন পূর্ণিমা। তার ১০ দিন পরেই নবমীর রাতে তাঁকে বাড়ির বিছানায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবার সূত্রে দাবি, তার আগে বেশ কিছু ক্ষণ তিনি একা ছিলেন। ছেলেমেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে জানান। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়না তদন্তে পাঠায়।

পূর্ণিমার ছেলে দেব জানান, নবমীর রাতে তাঁরা দুই ভাই-বোন ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় তাঁরা পূর্ণিমার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি। ঘণ্টাখানেক বাদে ফিরে দেখেন, বাড়ির সদর দরজা খোলা। পূর্ণিমা বিছানায় পড়ে। দেবের কথায়, ‘‘মা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি চিন্তিত ছিল। তাই মা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে, এমনটা বিশ্বাস হয় না। তা হলে কি আমাদের অনুপস্থিতিতে কেউ এসে বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে মাকে খুন করল?’’

দেব জানান, রাতে ঘুম না এলে পূর্ণিমা মাঝে মধ্যে ঘুমের ওষুধ খেতেন। তবে সেই রাতে যে ঘরে পূর্ণিমা শুয়েছিলেন, সেখানে কোনও সন্দেহজনক কৌটো বা ওষুধ পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরেই পুলিশ ঘরটি ‘সিল’ করে দিয়েছে। সর্বক্ষণের জন্য দরজার বাইরে মোতায়েন করা আছে পুলিশ। পরীক্ষা করতে আসার কথা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, ‘‘প্রাথমিক ভাবে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পূর্ণিমার মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলেই মনে হচ্ছে। আবার দাবি করছি, তপন কান্দু খুনের মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করে এই ঘটনার তদন্ত করা উচিত সিবিআইয়ের।’’ পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘ক্ষতিকারক পদার্থ পূর্ণিমার পেটে গেল কী ভাবে, পুলিশের তা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা উচিত।’’ দেব জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন, আলাদা তদন্তের আবেদন জানাবেন কি না।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE