হেমন্ত রায়
এলাকায় কাজ পাচ্ছিলেন না বলে বাঁকুড়ার এক শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে গিয়েছিলেন কাজের খোঁজে। সেখানে হেমন্ত রায় (২৫) নামে ওই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। রবিবার রাতে কেরলের আলাপুঝা জেলার পুচাক্কেল থানার পানাভাল্লি গ্রামে ইন্দাসের রোল গ্রামের বাসিন্দা হেমন্তের গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ঘটনাচক্রে বাঁকুড়াতেই রয়েছেন। গত সপ্তাহেই রাজস্থানে ‘লাভ জেহাদের’ নামে মালদহের শ্রমিক আফরাজুল খানকে কুপিয়ে, পুড়িয়ে খুন করা হয়।
হেমন্তের পরিবারেরও দাবি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। তবে, আলাপুঝার ডিএসপি লাল মঙ্গলবার ফোনে বলেন, ‘‘হেমন্তের সঙ্গীরা আমাদের কাছে দাবি করেছেন, তাঁরা ঘুমিয়ে থাকার সময় আনাজ কাটার ছুরি নিয়ে বাথরুমে ঢুকে হেমন্ত নিজেই নিজের গলায় কোপ মেরেছেন। এর পিছনে পারিবারিক কোনও সমস্যা থাকলেও থাকতে পারে। আমরা সব রকম সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছি।’’ পুচাক্কেল থানা সূত্রেও জানানো হয়েছে, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত করেছে।
হেমন্তের বাবা আনন্দ রায় এ দিন বলেন, ‘‘শনিবার রাতে বড় ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয়। সে বলেছিল, ইন্দাসে প্রচুর কাজের বরাত আসছে। তাই বাড়ি ফিরতে ট্রেনের টিকিট কেটেছে। তা হলে সে হঠাৎ আত্মহত্যা কেন করতে যাবে? গলা কেটে কেউ আত্মহত্যা করতে পারে? আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস হেমন্তকে খুন করা হয়েছে।’’ তবে এখনও তাঁরা খুনের অভিযোগ দায়ের করেননি। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস বলেন, ‘‘এ দিন হেমন্তের বাড়িতে ইন্দাস থানার পুলিশ গিয়েছিল। কেরল পুলিশের কাছেও খোঁজখবর নিচ্ছি।’’
পরিবার সূত্রে খবর, বছর দুয়েক আগে হেমন্তের বিয়ে হয়। তাঁর ছ’মাসের মেয়ে আছে। ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হলেও ইদানীং এলাকায় তেমন কাজ পাচ্ছিলেন না। তাই বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বাসিন্দা শেখ সামসুদ্দিনের সঙ্গে এলাকার কিছু ছেলে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজে যাচ্ছেন শুনে তিনিও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। দুর্গাপুজোর নবমীর দিন তাঁরা রওনা দেন। সেখানে একটি বৈদ্যুতিক সামগ্রীর দোকানে কাজ করতেন।
সামসুদ্দিন জানান, তিনটি ঘরে ২৪ জন শ্রমিক থাকতেন। তাঁর দাবি, ‘‘রবিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে বাড়ির কারও সঙ্গে মোবাইলে কিছুক্ষণ কথা বলে হেমন্ত। তার পর থেকেই দেখি, ওর মন-মেজাজ খারাপ। সবাই ঘুমোতে গেলেও ও খাবার ঘরে বসে বিড়ি খাচ্ছিল। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খাবার ঘর লাগোয়া বাথরুম থেকে গোঙানির আওয়াজ শুনে দু’জন ছুটে গিয়ে দেখে, হেমন্ত রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছে।’’
এ দিন সকালে হেমন্তের বাড়িতে যান ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটে। তিনি জানান, মৃতদেহ প্লেনে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy