সিমা আর্ট গ্যালারিতে শুরু হতে চলেছে আর্ট মেলা। — নিজস্ব চিত্র।
দেওয়ালে সাজানো সুন্দর ছবি দেখে নিশ্চয়ই তারিফ করেন? কিন্তু তার পরে আর্ট গ্যালারিতে গিয়ে তেমন ছবি কিনতে যান কি? শিল্পের সমঝদার যাঁরা, তাঁরা সবাই কি শিল্প সংগ্রহও করেন? ইচ্ছে থাকলেও পারেন না অনেকে। কারণ গুণী শিল্পীদের আঁকা ছবি দেখে কিনতে ইচ্ছে হলেও তার দাম থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তা হলে শিল্প কি সাধারণ মানুষের জন্য নয়? শিল্প যদি সমাঝদারের কাছে না-ই পৌঁছলো, তবে শিল্প বাঁচবে কী করে? শিল্পীরাই বা কী ভাবে ভাল থাকবেন? এ রকমই অনেক প্রশ্নের সমাধান করতে শিল্পের প্রদর্শনী শুরু করেছিল সিমা আর্ট গ্যালারি। যেখানে শিল্প হবে গুণী জনের। আবার তার দামও হবে আয়ত্ত্বের মধ্যে। সেই প্রদর্শনীও ১৬ বছর পার করে ফেলল। বুধবার থেকে কলকাতায় সিমা আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে ‘আর্ট মেলা’। যেখানে নাগালের মধ্যে গুণীশিল্পীদের আঁকা ছবি, ভাস্কর্য সংগ্রহ করতে পারবেন শিল্পপ্রেমীরা।
‘ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ বা ‘ফিকি’-র মহিলা সংগঠন ফ্লো-এর কলকাতা শাখা ওই আর্ট মেলার আয়োজনে হাত মিলিয়েছে সিমার সঙ্গে। মঙ্গলবার ফিকি-র মহিলা সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সিমায়। উপস্থিত ছিলেন ফিকি-র কলকাতা শাখার চেয়ারপার্সন শ্রদ্ধা মুরারকা। সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন নিধি ঝুনঝুনওয়ালা, পেশায় পোশাকশিল্পী শালিনী, মনোবিদ শ্রুতি মুন্দ্রা, পোশাদার আয়োজক পুনম প্রকাশ, অঙ্কের শিক্ষিকা রিচা আগরওয়াল-সহ অন্য মহিলা সদস্যরাও। আর ছিলেন সিমা-র অধিকর্তা রাখী সরকার এবং সিমার প্রধান প্রশাসনিক কর্তা প্রতীতী বসু সরকার।
আর্ট মেলার মূল ভাবনা কী ছিল, তা নিয়ে পরে কথাও বললেন রাখী এবং শ্রদ্ধা। রাখী বললেন, ‘‘আমরা যখন প্রথম আর্ট মেলা শুরু করি, তখন আমাদের লক্ষ্য ছিল একটাই। শিল্পকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কারণ সেই সময়ের বড় বড় শিল্পীরা যেমন যোগেন চৌধুরী, গণেশ পাইন, লালু প্রসাদ সাউদের কাছে একটা বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল, হয়তো আমাদের সমাজের যে সব ভাবনাশীল মানুষ যেমন চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, সরকারি আমলা বা ছাত্র তাঁরা শিল্প থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। সে সময়েই আমরা ঠিক করি, শিল্পে উৎসাহী সাধারণ মানুষ, যাঁরা ছবি, ভাস্কর্য বা অন্য শিল্প সংগ্রহ করতে ভালবাসেন অথচ বড় বড় শিল্পীদের কাজ ধরা ছোঁয়ার বাইরে হওয়ায় শখকে বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের কাছে নতুন করে শিল্পকে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম শিল্প সংগ্রাহকদের যে ক্ষেত্র, তাকে আরও বিস্তার করতে। সেটাই এখানে করতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস।’’
রাখী জানিয়েছেন, শিল্পীরা এখন সিমার উপরে ভরসা করে। কারণ, এখান থেকে তাঁদের আঁকা বহু ছবি গোটা দেশের শিল্প সংগ্রাহকদের হাতে পৌঁছোয়। আবার বহু সংগ্রাহকও তাঁদের সঞ্চয় উজাড় করে ছবি কেনেন সিমা থেকে। কারণ তাঁরা জানেন, এখানে তাঁরা খাঁটি জিনিসটি পাবেন। রাখী বললেন, ‘‘এমন কত যে কাহিনি রয়েছে। এক বার তো এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সিমা থেকে একটি গণেশ পাইনের আঁকা ছবি কিনবেন বলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাও তুলে ফেলেছিলেন!’’ আবার মঙ্গলবার ফিকি-র সদস্য পুনমকে দেখা গেল তাঁর নতুন বাড়ি সাজানোর স্থপতিকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। দেখে শুনে গোটা আষ্টেক ছবি কিনে ফেললেন তিনি।
শিল্পপ্রেমীদের কাছে সিমার গুরুত্ব স্বীকার করলেন ফিকি-র কলকাতা শাখার প্রধান শ্রদ্ধাও। তিনি বললেন, ‘‘কলকাতা হল ভারতের শিল্প এবং সংস্কৃতির রাজধানী। সিমা সেই শিল্পকে যে ভাবে যত্ন করে রেখেছে, তা গর্ব করার মতো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy