ধৃত: উৎপল বেহেরা
জিয়াগঞ্জে বন্ধুপ্রকাশ পালকে সপরিবার হত্যার পরে অভিযুক্ত উৎপল বেহেরা আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে আদালত থেকে থানায় নিয়ে আসার পরে লক-আপের মেঝেতে ঘণ্টা দেড়েক ঘুমোয় উৎপল। তার পরে, তদন্তকারীদের মুখোমুখি বসে নাগাড়ে শুনিয়ে গিয়েছিল প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ এবং তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে খুনের অনুপুঙ্খ বিবরণ। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের মুখোমুখি বসে ওই রাতে উৎপল জানিয়ে দেয়— ‘খুন চেপে গিয়েছিল স্যর। না হলে বুড়ো’দার (বন্ধুপ্রকাশ পাল) বৌ-ছেলেকে মারতাম না।’’
তদন্তকারীরা বলছেন, ‘‘কোনও খেদ নেই, কোনও রাখঢাক নেই, নির্বিকার গলায় উৎপল গোটা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে।’’ তবে খুন করার পরে তার আত্মহননের কথাও মনে হয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে সে। পুলিশের বক্তব্য, জেরায় সে জানায়, ‘ভেবেছিলাম বাড়ি গিয়ে ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে আত্মহত্যা করব। এক বার ভাবলাম পুলিশের কাছে গিয়ে সব খুলে বলি। তার পর ভেবে দেখলাম, থাক, যা করেছি বেশ করেছি, যা হয় হোক!’ উৎপলকে বুধবারও দিনভর জেরা করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, সব প্রশ্নেরই অকপটে জবাব দিয়ে গিয়েছে সে।
এ দিন উৎপলের দিদি ও জামাইবাবু শ্রাবণী ও পুলক সরকারকেও বেশ কিছু ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তাঁদের ফোনের কল-তালিকাও যাচাই করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়ানো কয়েকটি ছবি নিয়েও এ দিন চর্চা শুরু হয়। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি’র বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মশালায় উপস্থিত পুলক। আনন্দবাজার অবশ্য সে ছবির সত্যতা যাচাই করেনি। জিয়াগঞ্জের শহর-বিজেপি সভাপতি প্রতাপ হালদার অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘পুলক আমাদের সদস্য না হলেও সমর্থক।’’
জিয়াগঞ্জ কাণ্ডে মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল সৌভিক বণিক নামে এক যুবককেও। প্রতারণার মামলায় ধৃত সৌভিককে বুধবার জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সৌভিকের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে।’’ বন্ধুপ্রকাশের মামাতো ভাই সুজয় ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে সাগরদিঘি থানার পুলিশ সৌভিককে গ্রেফতার করে। গত ১৫ অক্টোবর সুজয় সাগরদিঘি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সুজয় জানান, তিনি ও তাঁর মা রূপালী ঘোষ ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত দফায় দফায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বেশ কয়েকটি পলিসি করিয়েছিলেন। সুজয়ের অভিযোগ, ‘‘সৌভিক পলিসি না করে পুরো টাকাটাই আত্মসাৎ করে। সে দাদার পরিচিত, তাই পলিসির টাকা মার যাবে না ভেবেছিলাম। দাদা খুন হয়ে যাওয়ার পরে সে ভরসা আর নেই। সৌভিকও আর টাকা ফেরত দিতে চাইছিল না। তাই অভিযোগ করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy