রামরামপুরে বন্ধুপ্রকাশের বাবার বাড়িতে সিআইডি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
বিজয়া দশমীর সকালে জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানে সপরিবার শিক্ষক খুনের ঘটনায় পুলিশি তদন্তে এখনও পর্যন্ত যার নাম বারবার সবচেয়ে বেশি উঠে এসেছে, সে হল রামপুরহাটের সৌভিক বণিক। এ বার সেই সৌভিকের প্রাক্তন স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। রবিবার রাতে শান্তিনিকেতনের সীমান্তপল্লিতে ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা। সঙ্গে ছিল বীরভূম জেলা পুলিশও। নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ মণ্ডলের সঙ্গে সৌভিকের ‘বন্ধুত্ব’-এর কথা জানতেন তিনিও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে দেখাশোনা করেই রামপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়ার বাসিন্দা সৌভিকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বিয়ে হয়েছিল দুর্গাপুরের বাসিন্দা এই মহিলার। বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি ভাঁড়শালাপাড়াতেই তাঁরা। কিন্তু ব্যবসায়িক কাজে বেশির ভাগ দিনই বাড়ির বাইরে থাকত সৌভিক। সোমবার সৌভিকের প্রাক্তন স্ত্রী জানান, ব্যবসায়িক সূত্রেই সৌভিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বন্ধুপ্রকাশ ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে। স্বামীর সঙ্গে বন্ধুত্বের সুবাদে তাঁর সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে বন্ধুপ্রকাশের পরিবারের। তিনি জানান, ওই বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল সৌভিকের। তাঁকেও একবার সৌভিক বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। এর পরে অতিরিক্ত সন্দেহের জেরে সৌভিকের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে বলে দাবি ওই মহিলার। সেই কারণেই ২০০৯ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
এর পর থেকে আর সৌভিকের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর। কিন্তু, জিয়াগঞ্জের হত্যাকাণ্ডে নানা দিক থেকে জড়িত সন্দেহে নাম উঠে এসেছে সৌভিকের। পুলিশ তাকে আটক করে জেরাও করছে। সেই তদন্তের সূত্রেই রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ শান্তিনিকেতন থানার একজন অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে সীমান্তপল্লিতে সৌভিকের প্রাক্তন স্ত্রীর বাড়িতে যায়মুর্শিদাবাদের পুলিশ। প্রায় আধঘণ্টা ধরে তাঁর সঙ্গে সৌভিকের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।
সোমবার তিনি জানান, সৌভিকের সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশের কেমন সম্পর্ক ছিল, বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে সৌভিকের কতটা আনাগোনা ছিল কিংবা সৌভিকের সঙ্গে নিহতের কেমন ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল— ইত্যাদি নানা প্রশ্ন তদন্তকারীরা তাঁর কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘যে ক’টা দিন সৌভিকের সঙ্গে ঘর করেছি, তাতে মনে হয় না সে এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। যদিও কার মনে কী রয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমি পুলিশকে জানিয়েছি, তদন্তের স্বার্থে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করব।’’ এর আগে বন্ধুপ্রকাশের শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছিলেন, সৌভিকের টাকা ধার নেওয়ার অভ্যাস ছিল। বন্ধুপ্রকাশের কাছ থেকেও নানা অছিলায় লক্ষাধিক টাকা ধার করেছিল সৌভিক। এ দিন সৌভিকতের প্রাক্তন স্ত্রীও একই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রায়ই এর-ওর কাছ থেকে টাকা ধার করত সৌভিক। এমনকি ব্যবসার কাজের জন্য আমার বাবার কাছ থেকেও অনেক টাকা ধার হিসেবে নিয়েছিল। সেই টাকা আজও সে ফেরত দেয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy