প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় রাষ্ট্রপতি। ছবি: পিটিআই
দেশের প্রথম ‘ধোঁয়া মুক্ত জেলা’ গড়ে তুলতে রাজ্যের মুর্শিদাবাদকেই বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা প্রকল্পে মুর্শিদাবাদের প্রতিটি পরিবারের কাছে তাই অতি দ্রুত রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। সে জন্য প্রান্তিক এই জেলায় গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরের সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা হচ্ছে বলে শনিবার ঘোষণা করলেন, কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
এ দিন, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে এ ঘোষণা করেন তিনি। রঘুনাথগঞ্জে প্রণববাবুর বাড়ির বৈঠকখানাতেই এ দিন আয়োজন করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা প্রকল্পের অনুষ্ঠানটি। বিদায়ী রাষ্ট্রপতিকে পাশে বসিয়েই ওই ঘোষণা শেষে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ধোঁয়ার দিন শেষ, এ বার ঘরে ঘরে গ্যাস, এবং তা শুরু হবে এই জেলা থেকেই।’’
২০১৬’র পয়লা মে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা প্রকল্প চালুর পর গত ১৬ মাসে ২২.১১ কোটির জনসংখ্যার জেলা উত্তরপ্রদেশে যেখানে মাত্র ৫৫ লক্ষ বিপিএল পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া গিয়েছে, সেখানে ৯.৭৮ কোটি জনসংখ্যার জেলা মুর্শিদাবাদে ৩৫ লক্ষ পরিবারে গ্যাসের সংযোগ কত দিনে দেওয়া যাবে তা নিয়ে অবশ্য সংশয় প্রকাশ করেছেন বিরোধীরা।
ধর্মেন্দ্র প্রসাদ অবশ্য জানাচ্ছেন, পিছিয়ে পড়া মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৬ লক্ষ পরিবারের মধ্যে ১০ লক্ষ পরিবার এখনও ঘুঁটে, কয়লায় রান্না করেন। জেলায় এ পর্যন্ত ৩.৫ লক্ষ পরিবারকে উজ্জ্বলা প্রকল্পে বিনা পয়সায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলাকেই দেশের মধ্যে প্রথম ধোঁয়া মুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এটাই তাদের চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন , “রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এই লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই আমরা। মমতাজীকে পাশে পেলেই তা সম্ভব।’’
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, এক জন মহিলা রান্না ঘরে যখন ধোঁয়ার মধ্যে এক ঘন্টা রান্না করেন তখন যে দূষণের মুখে পড়েন, বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা বা হু’এর মতে তা দিনে ৪০০টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতিকর। সেই দূষণ থেকে বাঁচাতেই এই উদ্যোগ। উত্তর প্রদেশের বালিয়াতে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, তবে সম্পূর্ণ ধোঁয়া মুক্ত জেলা হিসেবে মুর্শিদাবাদকেই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘চেয়েছিলাম রাষ্ট্রপতিকেও এই প্রকল্পের শরিক করে রাখতে। যখন জানলাম রাষ্ট্রপতি পশ্চিমবঙ্গে, তখন তাঁর জঙ্গিপুরের বাড়িতেই অনুষ্ঠান করব ঠিক করি।’’ তিনি জানান, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সফর সঙ্গী হয়ে তিনি ভিয়েতনামে গিয়েছিলাম। প্রণববাবুর তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ভিয়েতনামের সঙ্গে ভাল বাণিজ্যের সভাবনা রয়েছে পলি-ফাইবারের। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সেই পরামর্শ মেনে এগিয়েছে অনেকটাই। কিছু দিনের মধ্যেই ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে পলি-ফাইবার রফতানি শুরু হবে।
এ দিন রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিক ভাবে ১০ জন মহিলার হাতে গ্যাস সংযোগের নথিপত্র তুলে দেন। যা হাতে পেয়ে রঘুনাথগঞ্জের কলোনি পাড়ার গৌরী সরকার বলছেন, “স্বামী রাজমিস্ত্রি। বাড়িতে গ্যাস নেই। কোনও দিন ভাবিনি গ্যাসে রান্না করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy