Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
মৃত্যু বেড়ে ৪২, নিখোঁজ অন্তত ১

ময়না-তদন্ত হোক বাসের

বাস মালিক সংগঠন, মুর্শিদাবাদ বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা রথীন মণ্ডল অবশ্য স্বীকার করেন, এক শ্রেণির মালিক বেআইনি ভাবে বাস চালাচ্ছেন। ওই বাসটির ফরেন্সিক পরীক্ষার দাবি তুলেছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী।

নজর যখন জলে। মঙ্গলবার দৌলতাবাদে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নজর যখন জলে। মঙ্গলবার দৌলতাবাদে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

শুভাশিস সৈয়দ
বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৪
Share: Save:

বিলের ঘাট সেতু থেকে পড়ে যাওয়া বাসটির মালিকানা কার, তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে বাসের ফরেন্সিক পরীক্ষার দাবি উঠেছে।

গত বছর জানুয়ারিতে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার দু’টি বাস নানা রুটে চালানোর জন্য বহরমপুর পুরসভাকে দিয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বাসটি চালানোর জন্য পরে ডোমকলের এক সংস্থাকে ছ’মাসের চুক্তিতে দেয় পুরসভা। কিন্তু চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে পুরসভা নতুন করে তা পুনর্নবীকরণ করেনি।

পুরসভা সূত্রের খবর, ‘বঙ্গ ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেলস’ নামে ওই সংস্থার কয়েক জন সদস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই আবেদন এখনও মঞ্জুর করা হয়নি। সংস্থার অন্যতম কর্তা বাবলু মণ্ডল মঙ্গলবার দাবি করেন, ‘‘নতুন করে চুক্তি না হলেও বাসটি আমাদের দখলেই রয়েছে। আমরা নিজেরা না চালিয়ে সেন্টু ও মিন্টু বিশ্বাস নামে ডোমকলের বক্সীপুরের দুই ভাইকে বাসটি সাব-লিজ দিই। ওরাই বাসটা চালাত। তার জন্য কোনও লিখিত চুক্তি হয়নি। মৌখিক চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তারা মাসের শেষে টাকা দিত। লাভের অংশ ওরা নিত।’’

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, দিনের পর দিন বাসটির রক্ষণাবেক্ষণ হত না। এমনকী ডিজেলের বদলে কেরোসিনে বাসটি চালানো হত বলে বেসরকারি বাস মালিক সমিতির এক সদস্যের অভিযোগ। বহরমপুর পুরসভার কর্মী তথা প্রজেক্ট ম্যানেজার নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে বলেন, ‘‘পুরসভার বাস চালানোর অভিজ্ঞতা নেই। তাই পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন তারা নিজেরা না চালিয়ে অন্য কাউকে যদি দায়িত্ব দেয় বা নিয়মিত বাস রক্ষণাবেক্ষণ না করে, তা দেখার কথা পুরসভার নয়।’’

বাস মালিক সমিতির সদস্যের আরও অভিযোগ, বাবলু মণ্ডলদের সংস্থা বহরমপুর-কলকাতা রুটেও একটি বাস চালান। সেটিও বেআইনি ভাবে চালানো হয়। রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। রাতের দিকে চালক ও খালাসি দু’জনেই মদ্যপ অবস্থায় থাকে। যে কোনও দিন সেটিও দুর্ঘটনায় পড়তে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। যদিও বাবলু তা উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা বলেন, ‘‘এখন একটা ঘটনা ঘটেছে, তাই যে যা পারছে বলে যাচ্ছে। এ সব কথার কোনও ভিত্তি নেই।’’

বাস মালিক সংগঠন, মুর্শিদাবাদ বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা রথীন মণ্ডল অবশ্য স্বীকার করেন, এক শ্রেণির মালিক বেআইনি ভাবে বাস চালাচ্ছেন। ওই বাসটির ফরেন্সিক পরীক্ষার দাবি তুলেছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘লাশ নয়, বাসেরও ময়নাতদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ উত্তরবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার পরিত্যক্ত বাসগুলির খোলনলচে না বদলে উপর থেকে রঙ করা হয়েছে যাতে চকচকে দেখায়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE