Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নড্ডার সফরের প্রথমদিনে গোসাঘরে মুকুল, রাতে মানভঞ্জন

নড্ডার সভা এবং নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে যোগ‌ দিতে এসেও কেন চলে গেলেন মুকুল? এর পরই একের পর এক কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ফোন আসে তাঁর কাছে।

মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।

মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:৫২
Share: Save:

বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের সম্পর্ক যে ঠিক ‘সুরে’ বাজছে না, তা ফের প্রকাশ্যে এসেছিল বুধবার দলের সভাপতি জে পি নড্ডার সফরের প্রথমদিন। নড্ডার ডাকা বিধানসভা নির্বাচন পরিচালন কমিটির বৈঠকে যোগ দেননি মুকুল। থাকেননি বস্তিবাসীদের নিয়ে নড্ডার সভাতেও। সভাস্থলে এসেও সভা শুরু হওয়ার ঠিক আগে চলে যান মুকুল। তাঁর অনুপস্থিতিতেই হয় নড্ডার সভা ও বৈঠক। এর পর রাতেই শুরু হয় তাঁর মান ভাঙানোর চেষ্টা। বিজেপি সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত নড্ডার বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন মুকুল। ডায়মন্ড হারবারের কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যাবে।

রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য মুকুলের মান ও মান ভাঙানোর গোটা প্রক্রিয়ার কথাই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "চিকিৎসকের সঙ্গে জরুরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকার জন্য মুকুলদা চলে গিয়েছিলেন। অন্য কোনও বিষয় নেই এর মধ্যে।" মুকুলেরও দাবি, ‘‘শরীরটা ভাল নয় বলেই চলে এসেছিলাম। কারও উপর অভিমান নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, চিকিৎসককে দেখানোর পরে তিনি সুস্থ। বৃহস্পতিবার থাকবেন নড্ডার বৈঠক মঞ্চে।

ঘটনাপ্রবাহ বলছে, বুধবার দুপুরে কলকাতায় আসেন নড্ডা। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে গিয়েছিলেন মুকুল। এর পরে দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনের কর্মসূচিতে যান নড্ডা। সেখানে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় প্রমুখের সঙ্গে মুকুলও ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানের শেষে গিরিশ মুখার্জি রোডে নড্ডার ‘গৃহসম্পর্ক অভিযান’ ও কালীঘাট মন্দিরে পুজো দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। সে সব সেরে নড্ডা আসেন হো চি মিন সরণির আইসিসিআর-এ। সেখানে প্রথমে বস্তিবাসীদের নিয়ে সভা ও পরে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পরিচালন কমিটির বৈঠক করেন নড্ডা।

নড্ডা আসার অনেক আগেই আইসিসিআর-এ চলে এসেছিলেন মুকুল। নিজের অনুগামীদের নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার এক কোণে বসেছিলেন তিনি। তাঁকে দৃশ্যতই খানিকটা বিমর্ষ এবং বিষন্ন লাগছিল। আইসিসিআর চত্বরে ক্রমশ বিজেপি নেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। আসতে থাকেন সাংসদ ও রাজ্য কমিটির পদাধিকারীরা। সকলেই নড্ডা আসার অপেক্ষায়। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ খবর আসে, কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছবেন নড্ডা। শুরু হয় কাড়া-নাকাড়া বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানোর চূড়ান্ত তৎপরতা। তখনই খানিকটা চুপিসারেই সঙ্গীদের নিয়ে আইসিসিআর ছেড়ে যান মুকুল।

নড্ডার সভা এবং নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে যোগ‌ দিতে এসেও কেন চলে গেলেন মুকুল? তখনই ওই বিষয়ে কিছু জানা না গেলেও পরে রাজ্য বিজেপি-তে মুকুল অনুগামী হিসেবে পরিচিত এক নেতা বলেন, ‘‘এক জন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিকে যে ভাবে স্বাগত জানানো উচিত, তা করা হয়নি। সভা ও বৈঠক আয়োজনের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ভিতরেও ডাকেননি দাদাকে। চূড়ান্ত অব্যবস্থা ছিল। বেশ কিছুক্ষণ ক্যাফেটেরিয়ায় বসে থাকার পরে তিনি চলে যান।’’ যা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন মুকুল স্বয়ং।

আরও পড়ুন: উপড়ে ফেলেই ছাড়ব, কলকাতায় এসেই মমতাকে নিশানা নড্ডার

তবে মুকুল চলে যাওয়ার পরেই রাজ্যনেতৃত্ব ছন্দপতনের আঁচ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মান ভাঙানোর চেষ্টা শুরু হয় নড্ডার সভা ও বৈঠকের শেষে। নড্ডা-সহ বাকিরা রাজারহাটের হোটেলে চলে গেলেও কয়েকজন নেতা সোজা সল্টলেকে মুকুলের বাড়িতে পৌঁছে যান। মুকুলের অভিমানের খবর পৌঁছয় নড্ডার কাছেও। তৎপর হন কৈলাস। বিজেপি সূত্রের খবর, কৈলাস ছাড়াও কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই একে একে ফোন করেন মুকুলকে। প্রায় রাত ১০টা পর্যন্ত চেষ্টা চালানোর পরে বরফ গলে। সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে নড্ডার কর্মসূচিতে মুকুল থাকবেন বলেই ঠিক হয়েছে। তিনি ওই কর্মসূচিতে থাকতে রাজি হয়েছেন।

আরও পড়ুন: এ রাজ্যেও ‘সবচেয়ে বড় বিপদ বিজেপি’, ফের আওয়াজ তুলল লিবারেশন

অন্য বিষয়গুলি:

Mukul Roy JP Nadda Bengal BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy