ফাইল চিত্র।
বিধানসভায় মুকুল রায়ের দলবদল ঘিরে টানাপড়েনে যোগ হল নতুন মাত্রা। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে স্পিকারের ডাকা শুনানিতে হাজির হলেন না কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। তাঁর না আসতে পারার কথা স্পিকারকে চিঠি লিখে জানালেন সরকারি মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। বিরোধী দল বিজেপির দাবি, মুকুল যে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি, শাসক পক্ষের পরিষদীয় দলের সচেতকের চিঠিই তা প্রমাণ করার ‘হাতিয়ার’! মুকুলের বিধায়ক-পদ খারিজের দাবিতে শীঘ্রই আদালতে যাওয়ার কথাও জানিয়ে রেখেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে বিজেপির বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মুকুল। ফলপ্রকাশের মাসদেড়েকের মধ্যেই তিনি ফিরে যান তৃণমূলে। দলত্যাগ-বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজের যে আবেদন বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, তার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার শুনানিতে মুকুলকে হাজির হতে বলেছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আগেই তিনি হাজিরার জন্য এক মাস সময়ও চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিনও মুকুল আসেননি। অসুস্থতার জন্য তিনি আসতে পারছেন না, এই কথা জানিয়ে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন সরকারি মুখ্য সচেতক ও তৃণমূল বিধায়ক নির্মলবাবু। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এবং বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় অবশ্য শুনানিতে হাজির ছিলেন। নির্মলবাবুর মাধ্যমে মুকুলের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্পিকার আবার ১২ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
স্পিকারকে দেওয়া নির্মলবাবুর চিঠিকেই হাতিয়ার করেছেন বিরোধী দলনেতা। পরে তিনি বলেছেন, ‘‘মুকুলবাবু যে তৃণমূল পরিষদীয় দলের সদস্য হয়েছেন, তার প্রমাণ আজ দিয়ে দিয়েছেন! তাঁর উত্তরের বদলে স্পিকারকে চিঠি পাঠিয়েছেন সরকারি দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ।’’ বিরোধী শিবিরের যুক্তি, মুকুল নিজে, তাঁর কোনও প্রতিনিধি বা আইনজীবীও চিঠি দিয়ে বক্তব্য জানাতে পারতেন। কিন্তু সরকারি সচতেক সে কথা জানানোয় স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, মুকুল এখন শাসক শিবিরেরই লোক। শুভেন্দু ইঙ্গিত করেছেন তিনটি বিযয়ের দিকে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমত, নির্মল ঘোষ এই চিঠি দিয়েছেন। তাই স্পষ্ট যে, মুকুল রায় এখন তৃণমূল পরিষদীয় দলের সদস্য। ফলে, দলত্যাগ-বিরোধী আইন এখনই কার্যকর করা দরকার। দ্বিতীয়ত, মুকুলবাবু নিজে আসতে না পারলেও চিঠি দিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে পারতেন। তৃতীয়ত, তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের চিঠির সঙ্গে মুকুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনও নথি দেওয়া হয়নি।’’
বিতর্কের প্রেক্ষিতে নির্মলবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, সরকারি মুখ্য সচেতক হিসেবে যে কোনও বিধায়কের সমস্যার কথাই তাঁর কাছে জানানো হতে পারে। তাঁর দাবি, ‘‘আগে বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস বিধায়কদের কেউ কেউও তাঁদের সমস্যার কথা আমাকে জানাতেন। এই ক্ষেত্রেও আমি একটা তথ্য স্পিকারকে জানিয়েছি। এর মধ্যে কোনও ভুল দেখছি না।’’
মণিপুর বিধানসভার একটি দলত্যাগ-বিরোধী মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি এ দিন শুনানিতে জমা দিয়েছেন শুভেন্দু। যেখানে বলা হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকারকে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুভেন্দু জানান, মুকুলের বিষয়ে তিন মাস অতিক্রান্ত এবং সম্ভব হলে আগামী সোমবারই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন। আরও দুই দলত্যাগী, বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ ও বাগদার বিশ্বজিৎ দাসের বিধায়ক-পদ খারিজের জন্য ইতিমধ্যে স্পিকারের কাছে আবেদন করেছেন বিরোধী দলনেতা। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে ‘ফল’ না পেলেও ওই সব ক্ষেত্রেও আদালতে যেতে চায় বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy