দিদির ফোঁটায় চমক! ফাইল চিত্র।
ভ্রাতৃদ্বিতীয়ায় ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ফোঁটার অনুষ্ঠান বরাবরই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। অনেক বছরেই অনেক চমক দেখা গিয়েছে। তবে এ বার সত্যিই বড় চমক। বৃহস্পতিবার দুপুরে কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে মমতার হাতে ফোঁটা নিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়।
পদ্মের টিকিটে জিতলেও মুকুল অবশ্য এখন তৃণমূলে। পুরনো দলে ফেরার পরে পুরনো আচারেও ফিরলেন। মুকুলকে যে মমতা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভাইফোঁটা নিতে, তা অনেকেই জানতেন না। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, মুকুল শেষ বার মমতার বাড়িতে ভাইফোঁটায় এসেছিলেন ২০১৬ সালে। তার পরে গত ছ’বছরে কোনও বার ভাইফোঁটায় মুকুল এসেছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। তবে সাম্প্রতিক কালে যে আসেননি, তা অনেকেই জোরগলায় দাবি করছেন। স্বয়ং মুকুল এ নিয়ে কিছু বলেননি। তাঁর মোবাইল নিরুত্তর থেকেছে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, মুকুল গিয়েছিলেন কালীঘাটে।
ফি-বছর মমতার বাড়িতে ভাইফোঁটা হলেও গত দু’বছর তাতে বাদ সেধেছিল করোনা। এ বছর আবার শুরু হলেও ভাইয়ের তালিকা ছিল খানিকটা সংক্ষিপ্ত। সেই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন মুকুল। যা দেখে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। জল্পনা হচ্ছে, গত কয়েক মাস ধরে রাজনীতি থেকে অনেকটা দূরে থাকা মুকুল ক্রমেই ‘সক্রিয়’ হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতার ভাইফোঁটা কি সেই ‘সক্রিয়তা’ আরও বাড়িয়ে দেবে? সামনেই পঞ্চায়েত। ফলে সেই আলোচনা নতুন রাজনৈতিক মাত্রাও পেয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, ভাইফোঁটার আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে মুকুলের সঙ্গে কথাও হয়েছে মমতার। তবে তার বিষয় কী ছিল তা জানা যায়নি।
২০১৬ সালের পর থেকেই মমতা-মুকুল সম্পর্ক অনেকটা ‘শীতল’ হয়ে গিয়েছিল। পর্যায়ক্রমে মুকুলের তৃণমূল ত্যাগ এবং বিজেপিতে যোগদান। তা ঘটেছিল ২০১৭ সালের ভাইফোঁটার আগে। গত কয়েক বছরে বিজেপির রাজ্য দফতরে মুকুলকে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে কি না, তা নিয়ে অবশ্য কেউ মাথা ঘামাননি। কারণ, বিজেপিতে সে ভাবে কোনও ‘সর্বজনীন দিদি’ নেই। তাই বৃহস্পতিবার মুকুলের কালীঘাটে আসা এবং দিদির হাতে ফোঁটা নেওয়া ঘটনায় বাড়তি গুরুত্ব তৈরি করেছে।
প্রসঙ্গত, মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ভাইফোঁটায় মুকুলের অনুপস্থিতি থাকলেও ২০১৯ সালে ভাইফোঁটায় এসেছিলেন অধুনা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে তাঁর সঙ্গে দিদির এখন অনেক দূরত্ব! পক্ষান্তরে, মুকুলের সঙ্গে মমতার সম্পর্ক ক্রমে পুরনো ছন্দে ফিরছে।
তৃণমূলে ফেরার পর অনেক বিতর্ক সত্ত্বেও বিধানসভার ‘পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি’র চেয়ারম্যান করা হয়েছিল মুকুলকে। সেই পদ অবশ্য নিজে থেকে ছেড়ে দেন তিনি। তার পরে গত ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে মুকুলকে দেখা গিয়েছিল। মাঝে তপসিয়ায় দলীয় দফতরে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। এর পরে ৮ সেপ্টেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বুথকর্মী সম্মেলনের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল মুকুলকে। দুর্গাপুজোর পরে কালীঘাটে বিজয়া সারতেও গিয়েছিলেন তিনি। আবার মুকুলের বাড়িতে বিজয়া সারতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের দুই মন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনার নেতা পার্থ ভৌমিক এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy