Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

‘সিল’ খামার থেকেও উধাও জিনিস, নালিশ

ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে বিশেষ কমিটি গড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম শহরের উপকণ্ঠে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা এমপিএসের বিশাল খামারে সব সময়ের জন্য পুলিশও মোতায়েন রয়েছে।

এমপিএস খামারে হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটির সদস্যরা। সোমবার দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।

এমপিএস খামারে হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটির সদস্যরা। সোমবার দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৬ ০৩:৩৯
Share: Save:

ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে বিশেষ কমিটি গড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম শহরের উপকণ্ঠে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা এমপিএসের বিশাল খামারে সব সময়ের জন্য পুলিশও মোতায়েন রয়েছে। তা-ও ওই খামার থেকে ‘সিল’ হওয়া বহু মূল্যবান জিনিসপত্র উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন আমানতকারী ও তাঁদের আইনজীবীরা।

এমপিএসের মালিক প্রমথনাথ মান্না এখন জেলবন্দি। সংস্থার ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর জন্য প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারকে চেয়ারম্যান করে যে বিশেষ কমিটি গড়ে দিয়েছে, তার তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সোমবার ঝাড়গ্রামের দহিজুড়ির ওই খামারে এসেছিল। নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের অর্থ দফতরের কর্তা প্রবীরকুমার ঘটক। কমিটির সদস্যরা এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগ-সহ খামারের কিছু অংশ ঘুরে দেখেন। প্রমথনাথবাবুর মেয়ে কৃষ্ণা মান্না ও এমপিএসের তরফে দুই আইনজীবী গৌরব দাস ও কৌশিক চৌধুরীর উপস্থিতিতেই চলে সম্পত্তির তথ্য সংগ্রহের কাজ। ছিলেন মামলার মূল অভিযোগকারী ভাস্কর দাশগুপ্ত-সহ চারজন আমানতকারী ও তাঁদের আইনজীবীরা এবং এই মামলার সিবিআই তদন্তকারী অফিসার আকবর ইকবাল।

খামারের একাংশ ঘুরে দেখার পরে আমানতকারীদের আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, সিল করা সত্ত্বেও কম্পিউটার, এসি মেশিন, পাম্প, আসবাবের মতো বহু মূল্যবান জিনিস উধাও হয়ে গিয়েছে। গত বছর মে মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আমানতকারী ও আইনজীবীদের এক প্রতিনিধি দল এই খামারের সম্পত্তির তথ্য সংগ্রহ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে জমা দিয়েছিল। তখনও শুভাশিসবাবু এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এক বছর পরে এসে সম্পত্তির বিস্তর অসঙ্গতি দেখছি।’’ এমন চলতে থাকলে আমানতকারীদের টাকা ফেরতের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। কারণ, টাকা ফেরত দিতে ভবিষ্যতে এই সম্পত্তি নিলামে উঠতে পারে।

ঝাড়গ্রাম শহরের উপকণ্ঠে দহিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের দিঘিশোল মৌজায় চারশো একর জায়গা জুড়ে ছিল এমপিএস-এর বহুমুখি কৃষিখামার ও বাণিজ্যিক ভবন। সেখানে মিনারেল ওয়াটার তৈরির কারখানা, বিলাসবহুল রিসর্ট, একাধিক রেস্তোরাঁ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগও ছিল। অভিযোগ, ওই কর্মকাণ্ড দেখিয়েই বাজার থেকে টাকা তুলত এমপিএস। সেবি-র নিষেধ সত্ত্বেও এমপিএস বাজার থেকে টাকা তুলছে বলে হাইকোর্টে অভিযোগ জানান লগ্নিকারীরা। তারপরই এই খামারের সম্পত্তির তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ কমিটিকে দায়িত্ব দেয় হাইকোর্ট। গত ফেব্রুয়ারি থেকে কমিটির কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু কমিটিকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক গড়িমসির অভিযোগ ওঠে। এ জন্য সরকার পক্ষকে ভর্ৎসনাও করে আদালত। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, ভোটপ্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় কমিটিকে সাহায্য করা সম্ভব হয়নি। আগামীতে সব রকম সাহায্য করা হবে। তারপরই স্থির হয়, কমিটির প্রতিনিধিরা ৩০ মে থেকে ৩ জুন ঝাড়গ্রামে থেকে এমপিএস খামারে সম্পত্তির তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনার কাজ করবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

MPS firm MPS Owner Arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy