আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে তিন প্রধানের সমর্থকেরা। —ফাইল ছবি।
নৈহাটির উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র প্রশংসা করে ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন কলকাতার তিন প্রধান ক্লাব মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান স্পোর্টিংয়ের কর্তারা। দেবাশিস দত্ত, দেবব্রত সরকার, কামারুদ্দিনদের সেই বক্তব্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। এ বার ক্লাব কর্তাদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে চলেছেন তিন প্রধানের সমর্থকেরা।
আগামী মঙ্গলবার দুপুরে ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির সামনে জমায়েতের ডাক দিয়েছেন তিন প্রধানের সমর্থকদের মঞ্চ ‘তিলোত্তমার পাশে ময়দান’। আরজি কর পর্বেই তৈরি হয় এই মঞ্চ। আন্দোলনের আবহে গত ১৮ অগস্ট ডুরান্ড কাপের ডার্বি বাতিল করেছিল বিধাননগর পুলিশ। ওই দিনই যুবভারতীর সামনে, বাইপাসের অনেকটা জুড়ে জড়ো হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডানের কয়েক হাজার সমর্থক। সেই বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিও চলেছিল। সেই থেকেই এই মঞ্চ আরজি কর নিয়ে বিভিন্ন নাগরিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। এ বার সরাসরি রাজনীতিমুক্ত ময়দানের দাবিতে রাস্তায় নামতে চলেছে তারা।
তিন প্রধানের সমর্থকদের একটি অংশের বক্তব্য, ক্লাবের কর্তারা কেন রাজনীতির কথা বলবেন? কেন তাঁরা নির্দিষ্ট এক জন প্রার্থীর স্তুতি গাইবেন? ‘রাজনীতিমুক্ত ময়দান’ গড়ার দাবি নিয়ে মঙ্গলবার জমায়েতের ডাক দিয়েছেন তিন প্রধানের সমর্থকেরা। তিন প্রধানের কর্তার ওই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। যদিও তৃণমূলের তরফে কুণাল ঘোষ সে দিনই বলেছিলেন, ‘‘তিন কর্তা এক জন ক্রীড়া সংগঠকের প্রশংসা করেছেন। এর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। যা করেছেন বেশ করেছেন।’’ কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি। বরং বৃদ্ধি পায়। পাল্টা কুণাল পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, সিপিএমের শচীন সেন, স্নেহাংশু আচার্য, মানস মুখোপাধ্যায়েরা ইস্টবেঙ্গলের বিভিন্ন পদে ছিলেন। বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। কল্যাণ চৌবের প্রসঙ্গও তুলেছিলেন কুণাল। এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ মানিকতলায় ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপির হয়ে। কুণাল দেখাতে চেয়েছিলেন, ময়দানের ক্লাবগুলিতে রাজনৈতিক নেতাদের যোগ অতীতেও ছিল। তাঁর এ-ও দাবি, এই বিতর্ক তৈরির নেপথ্যে রয়েছে সিপিএম।
প্রসঙ্গত, কুণাল নিজে মোহনবাগানের কর্মসমিতির অন্যতম সদস্য। তা ছাড়া বাগানের এখনকার যে কর্মসমিতি তাতে রয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং অরূপ রায়। কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষও রয়েছেন মোহনবাগান কর্মসমিতিতে। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদও মহামেডানের কর্তা ছিলেন।
সমর্থকেরা অবশ্য অন্য যুক্তি দিচ্ছেন। ‘ময়দানের পাশে তিলোত্তমা’র অন্যতম সংগঠক সুরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক নেতারা ক্লাবে যুক্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু ক্লাবের কর্তার পরিচয় ভাঙিয়ে কেউ রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারেন না। সে তিনি যে-ই হোন। এটাই ময়দানের রাজনীতিকরণ।’’ অন্য সংগঠক সুমিত তালুকদারের বক্তব্য, ‘‘ময়দানেও থ্রেট কালচার চলছে। সে কারণেই ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবের স্পন্সরশিপ ঘোষণা হয় নবান্ন থেকে। এই পরিবেশ থেকে ময়দানকে মুক্ত করতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy