মাতলা নদীর চর দখল করে আস্তানা। নিজস্ব চিত্র
বছরের পর বছর ধরে নদীর চরের জমি বিক্রি হয়েছে। অভিযোগ, সে দিকে দেখেও দেখেননি শাসক দলের নেতারা। এত দিনে টনক নড়েছে ক্যানিংয়ের তৃণমূল নেতৃত্বের। মাতলা নদীর চর যে বেদখল হয়ে যাচ্ছে, সে কথা জানিয়ে মহকুমা শাসককের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল।
মাতলা নদীর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার চরে ভিনদেশ থেকে অনেকে এসে আস্তানা ঘর তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শ্যামল। যার পিছনে তাঁর দলের কিছু স্থানীয় নেতার হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ এনেছেন বিধায়ক। ২০১৪-১৫ সাল থেকে চর-দখল চলছে বলে তাঁর অভিযোগ। এ জন্য প্রচুর ম্যানগ্রোভ কাটা পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শ্যামল বলেন, ‘‘এই এলাকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা ভিন্ দেশ থেকে এসেছেন। অধিকাংশেরই রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড নেই। কোথা থেকে এঁরা এলেন, তা স্থানীয় প্রশাসনও জানে না। প্রশাসনের পাশাপাশি এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ বিধায়কের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান ক্যানিংয়ের মহকুমা শাসক রবিপ্রকাশ মিনা। তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ক্যানিংয়ের চর বিশাল এলাকা জুড়ে। তবে গত কয়েক বছর ধরে এলাকায় যে চর পড়েছে, তা-ই বেদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। তৃণমূল বিধায়ক এত দিন বাদে নড়েচড়ে বসায় কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুনীপ দাস বলেন, “এই এলাকায় ভিন্ দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকাচ্ছে তৃণমূল। মোটা টাকার বিনিময়ে তাদের বসানো হচ্ছে। এত দিন তৃণমূলের বিধায়ক কোথায় ছিলেন?’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক শমীক লাহিড়ি বলেন, ‘‘শুধু মাতলার চর কেন, তৃণমূল নেতারা সমস্ত সরকারি জমি, খাল বেচে দিচ্ছেন। এত দিনে ওদের বিধায়কের হুঁশ ফিরেছে।”
আরও পড়ুন: ভোটের আগে আচমকা গোর্খাল্যান্ড বৈঠকের ডাক কেন্দ্রের, ক্ষুব্ধ নবান্ন
নগদ টাকার বিনিময়ে তাঁরা যে জমি পেয়েছেন, সে কথা রাখঢাক না করেই বলছেন চরের জমিতে ঘর-বাড়ি করে থাকা মানুষজন। কেউ দিয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। কেউ ঘর তৈরির এক ফালি জমি পেয়েছেন ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে। এলাকার নেতাদের কাছ থেকে জায়গা কিনেছেন বলে জানালেন তাঁরা। প্রলয় মণ্ডল, বিউটি সর্দার, সত্য প্রামাণিকরা বলেন, জায়গা পেয়েছি ঠিকই। কিন্তু রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড না থাকায় কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না।” তা হলে কি আপনারা বিদেশি? সে কথা কেউ মানতে চান না। এ প্রশ্নের মুখে পড়লে কথা ঘুরিয়ে দিতেই পছন্দ করেন। কেউ উত্তর দেন, ‘‘অনেক কাল ধরে এ দেশই আমাদের ঘরবাড়ি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy