রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোটেও এই বাহিনীকে কাজে লাগানো হবে। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
একাধিক দফায় পঞ্চায়েত ভোট করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। এই আবহে পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী পাঠাচ্ছে না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আরও ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের কাছে মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগেই ২২ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার আরও ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করল। আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই রাজ্যে অশান্তির একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই আবহে একসঙ্গে কেন ৮০০ কোম্পানি বাহিনী পাঠাচ্ছে না অমিত শাহের মন্ত্রক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জল্পনা ছড়াচ্ছে, তা হলে কি পঞ্চায়েত ভোট একাধিক দফায় করার ‘চাপ’ দিতেই একসঙ্গে সব বাহিনী মোতায়েন করছে না কেন্দ্র? পক্ষান্তরে কি এটা বলতে চাইছে যে, এক দিনে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী দেওয়ার পক্ষপাতী নয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক? অন্তত যে ভাবে প্রথমে ২২ এবং তারও পরে ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর অনুমতি দিল শাহের মন্ত্রক, তা থেকে এমন সিদ্ধান্ত কষ্টকল্পিত নয়।
বস্তুত, একাধিক দফায় ভোট করানোর দাবি জানিয়েছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি দেওয়া সম্ভব নয় কেন্দ্রের। কোনও সরকারই একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি দিতে পারবে না। গত বার পাঁচ দফায় ভোট হয়েছিল। এ বারও একাধিক দফায় ভোট হোক।’’ বাহিনী নিয়ে আবার আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ‘‘এক দফায় ভোটে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী যথেষ্ট নয়। বাহিনীর সংখ্যাটা বিষয় নয়। সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোট দরকার। আমাদের দাবি, সংখ্যা নিয়ে নয়। সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ২০১৩ সালের মতো।’’ এই আবহে একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী না পাঠিয়ে কেন্দ্রও কি তেমনই কোন ‘চাপ’ দিতে চাইল?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৩১৫ কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে সিআরপিএফ থাকবে ৫০ কোম্পানি, বিএসএফ ৬০ কোম্পানি, সিআইএসএফ ২৫ কোম্পানি, আইটিবিপি ২০ কোম্পানি, এসএসবি ২৫ কোম্পানি, আরপিএফ ২০ কোম্পানি। বাকি ১২টি রাজ্য থেকে ‘স্পেশাল আর্মড ফোর্স’ থাকবে ১১৫ কোম্পানি।
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে প্রথম থেকেই সরব বিরোধীরা। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রাণহানি, রক্তপাত, বোমাবাজি, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই আবহে রাজ্যের সব জেলাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু পরে সেই অবস্থান বদল করে কমিশন। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গত মঙ্গলবার সেই মামলায় রাজ্য এবং কমিশনের আবেদন খারিজ করে হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার পরও বাহিনী নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটেনি। আদালতের নির্দেশের পরে পঞ্চায়েত ভোটে ২২টি জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। বুধবার সেই বাহিনী চাওয়া নিয়ে হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য রাজ্যে অন্তত ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে আনতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। সেই মতো বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের কাছে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। জানানো হয়েছে, রাজ্যে মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী আসছে। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy