প্রতীকী ছবি।
একে করোনার ভয়। তার উপরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সেই কৈশোর থেকে বাড়ির বাইরে থাকাই যাদের অভ্যাস, মুর্শিদাবাদের ডোমকলের সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই এখন চাইছেন, যে করে হোক বাড়িতেই থাকতে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কাজের আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু কাজ এখনও তেমন কিছু জোটেনি। তাই ডোমকলের কিছু পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের পুঁজি ভেঙে ব্যবসা শুরু করেছেন। পুজোর আগেই তাঁরা খুলেছিলেন রেস্তরাঁ। এখন তাতে বেশ লাভের মুখও দেখছেন।
কিন্তু হঠাৎ রেস্তরাঁ কেন? পরিযায়ীরা জানাচ্ছেন, ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে লেখাপড়া জানা বেকার যুবকদের অনেকেই উঠেছিলেন সেখানকার হোটেলে।
আর সেখানে নানা কাজের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে করতেই প্রবেশ ঘটেছিল একেবারে রান্নাঘরে। ছোট-বড় এমন নানা হোটেলে রান্নার কাজ করতে করতে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক এখন দক্ষ রাঁধুনি। তাঁদের হাতের রান্নায় জিভে জল আসে ভোজনরসিকদের। অনেকেই আবার রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েও পেশা বদলে শেষ পর্যন্ত ভিন্ রাজ্যের রেস্তরাঁতেই কাজ শুরু করেন। কিন্তু লকডাউনের সময় ভিন রাজ্যের শহরের হোটেল-রেস্তরাঁ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন তাঁরা।
তাঁরাই ঘরের কাছে খুলেছেন নিজেদের রেস্তরাঁ। সেখানে নিত্য নতুন খাবার ছাড়াও কম দামে আলু বিরিয়ানি, ডিম বিরিয়ানি ও মাটন, চিকেন বিরিয়ানি তৈরি করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই খাবারের স্বাদ পেয়ে ক্রেতারাও ভিড় জমান সেই হোটেল ও রেস্তরাঁগুলিতে। আর সেখানে ভিড় দেখেই সাহস পেয়ে একের পর আরও রেস্তরাঁ খুলেছেন অন্যরাও। ফলে প্রত্যন্ত এলাকায় লকডাউনের পর থেকে অন্যান্য ব্যবসা যখন ধুঁকছে, ঠিক সেই সময়ে ডোমকল শহরের বিশেষ কিছু এলাকাকে বিরিয়ানি পট্টি বলে দাবি করছেন অনেকেই। ডোমকল বাস স্ট্যান্ড থেকে পুরাতন বিডিও মোড় পর্যন্ত মেরেকেটে ২০০ মিটার এলাকার মধ্যেই গজিয়ে উঠেছে এক ডজনেরও বেশি বিরিয়ানির হোটেল ও রেস্তরাঁ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এর মূল কারণ ভিন্ রাজ্য থেকে চলে আসা রাঁধুনি।
তেমনই এক রেস্তরাঁর কর্ণধার নজরুল ইসলাম বলছেন, ‘‘আমরা যখন ডোমকলের ভাল রেস্তরাঁ করার পরিকল্পনা করেছিলাম, তখন অনেকেই বলেছিলেন, এখানে ও সব চলবে না। কিন্তু শুরু করার পরে বুঝতে পারছি প্রচুর ভোজনরসিক মানুষ আছেন এখানে।’’
একই বক্তব্য ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে এসে এখানকার হোটেলে রাঁধুনি কাজ নেওয়া যুবক রবিউল ইসলামের। তাঁর কথায়, ‘‘ভিন্ রাজ্যে গেলে ভাল হোটেলে হয়তো কিছু বেশি পয়সা পেতাম ঠিকই, কিন্তু পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ হত না। তা ছাড়া লকডাউনে ফেরার সময় যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে আর ভিন্ রাজ্যে নয়। দু’বেলা খেয়ে পরে এলাকায় থাকতে চাই। এখানে আমাদের রান্নার ভাল কদরও আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy