প্রবোধ পণ্ডা। —ফাইল চিত্র
মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ প্রবোধ পণ্ডা সিপিআইয়ের নতুন রাজ্য সম্পাদক হলেন। বুধবারই বর্ধমানের অণ্ডালে শেষ হয়েছে দলের রাজ্য সম্মেলন। সম্মেলন থেকেই দলের রাজ্য সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন প্রবোধবাবু। পালাবদলের আগে থেকেই রাজ্যে বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত রয়েছে। সেই ধারায় ব্যতিক্রম নয় সিপিআই-ও। এই পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরাটা কী চ্যালেঞ্জ নয়? সিপিআইয়ের নবনির্বাচিত রাজ্য সম্পাদক বলছেন, “প্রতিকূলতার মধ্যেই এগোতে হবে। আমাদের লড়াই মানুষের জন্য। গরিবের জন্য।” একই সঙ্গে তিনি বলছেন, “দল দায়িত্ব দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও দলকে শক্তিশালী করতে সব চেষ্টা করব।”
গত রবিবার থেকে অণ্ডালে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়। চার দিনের এই সম্মেলনের শেষ দিন ছিল বুধবার। দলের রাজ্য সম্পাদকের পদে বহু দিন ছিলেন মঞ্জুকুমার মজুমদার। তাঁর পরিবর্তে কে দলের হাল ধরেন, তা নিয়ে দিন কয়েক ধরেই জল্পনা ছিল দলের অন্দরে-বাইরে। এ দিন বেলা কিছুটা গড়াতেই সেই জল্পনায় ইতি পড়ে। রাজ্য সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিক্রমে রাজ্য সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন প্রবোধবাবু।
প্রবোধবাবুর দেশের বাড়ির এগরায়। রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। সময়টা ষাটের দশকের শেষ। ছাত্র আন্দোলনের পর যুব আন্দোলন করেছেন। তারপর সরাসরি সিপিআইয়ে। জেলা কমিটির সদস্য হন সত্তরের দশকে। দলের অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পান নব্বইয়ের দশকের শেষে। পরে মেদিনীপুরের সাংসদও হন। গত লোকসভা নির্বাচনেও মেদিনীপুরে প্রার্থী হন। অবশ্য তাঁকে পরাজিত হতে হয় তৃণমূলের তারকা প্রার্থী, অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়ের কাছে। বছর তিনেক আগে দলের কৃষক সংগঠন কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক হন প্রবোধবাবু। পরে কৃষকসভার সর্বভারতীয় সভাপতিও হন। এখনও এই দুই পদে রয়েছেন। মেদিনীপুরের বিধাননগরের বাসিন্দা প্রবোধবাবুর জীবনযাপন সাধারণ। পোষাকও সাদামাটা। প্রায়শই পরেন সুতির প্যান্ট। হাফ শার্ট। রোদের সময় মাথায় থাকে গোল টুপি। অবসরে সংসদে বক্তৃতার পুরনো সিডি দেখেন।
মেদিনীপুরের মতো মফফ্সল শহর থেকে এই উত্তরণের পথটা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু, দলের প্রতি আনুগত্য আর দক্ষতায় পথটা সহজ করে নিয়েছেন বছর সত্তরের প্রবোধবাবুই। রাজ্য সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রাক্তন সাংসদ বলছিলেন, “বামফ্রন্টের আমলে কী কিছুই হয়নি? গ্রামে রাস্তাঘাট হয়েছে। বিদ্যুৎ এসেছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে। কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য দাম পেয়েছেন। আর এখন? সর্বত্র অরাজকতা।” প্রবোধবাবু রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ায় খুশি মেদিনীপুরের সিপিআই নেতা-কর্মী-সমর্থকেরাও। প্রবোধবাবুর সহপাঠী ছিলেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা। দু’জনই দাঁতন কলেজের প্রাক্তনী। সন্তোষবাবু বলছিলেন, “আমরা নিশ্চিত, ওঁর নেতৃত্বে রাজ্যে শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম আরও তীব্র হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy