বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এক শবর তরুণীকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল দাঁতনে। মারধর করে তাঁর চুল কেটে দেওয়া হয় এবং শ্লীলতাহানি করা হয় বলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই তরুণী নিজেই দাঁতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে ওই তরুণীর সঙ্গে যার সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ সেই বিল্টু গিরি, বিল্টুর স্ত্রী সবিতা ও কাকা শশাঙ্ক গিরিকে রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার ধৃতদের মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হলে তিন জনেরই জামিন মঞ্জুর হয়। আগামী ২৭ মার্চ ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে।
নিগৃহীতা তরুণীর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরে দাঁতনের পাঁচরোল গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে সবংয়ের দশগ্রাম এলাকার বড়চারা গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। তবে স্বামীর সঙ্গে অশান্তির জেরে বছর তিনেক আগে মেয়েকে নিয়ে ওই তরুণী বাপের বাড়িতে চলে আসেন। সেই থেকে বাপের বাড়িতে থাকেন তিনি। পাশেই বাড়ি বিল্টুদের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিবাহিত বিল্টুর সঙ্গে ওই তরুণীর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। এই নিয়ে দুই পরিবারে অশান্তিও হয়। শুক্রবার সকালে ফের গোলমাল বাধে। অভিযোগ, পাড়ার কলতলায় বিল্টু এবং ওই তরুণীকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। তারপরই বিল্টুর পরিজনেরা ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে এসে গ্রামের শীতলা মন্দিরের কাছে নিয়ে গিয়ে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে বলে অভিযোগ। তরুণীর চুলও কেটে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন তরুণীর মা। মেয়েকে উদ্ধার করে তিনি বাড়িতে নিয়ে যান। সন্ধ্যায় ওই তরুণী বিল্টু, তাঁর স্ত্রী সবিতা, কাকা শশাঙ্ক-সহ মোট ৬ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। বিল্টুর সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের কথা অবশ্য মানতে চাননি ওই তরুণীর বাবা। তিনি এ দিন বলেন, “আমার মেয়ের সঙ্গে বিল্টুর সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করত বিল্টুর পরিবারের লোকজন। শুক্রবার আমার মেয়ে জল নিতেই কলপাড়ে গিয়েছিল। ওকে বদনাম করতে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়। যারা ওর শ্লীলতাহানি করেছে, ওকে মেরেছে তাদের শাস্তি চাই।” অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতিও। সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক বলাই নায়েক বলেন, “যারা আমাদের ওই শবর মেয়ের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, তাদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দিতে হবে। না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।” খড়্গপুরের এসডিপিও অজিত সিংহ যাদব বলেন, “অভিযোগ পেয়েই তিন জনকে ধরেছি। বাকিদের খোঁজ চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy