মেদিনীপুর মেডিক্যালে জখম নারায়ণ হুই।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সভা ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। কাল, বুধবার মেদিনীপুরে এই সভা রয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, সভা ভেস্তে দিতে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূলের লোকজন। বিভিন্ন এলাকায় দলের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি-র জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের রোখার সব রকম চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি আমাদের বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যেতে বাধ্য করছে।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের মন্তব্য, “তেমন কোনও ঘটনা কোথাও ঘটেনি। দলের কর্মীদেরও প্ররোচনায় পা না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বিজেপির অভিযোগ, শালবনির খাঁদিবাঁধে, খড়্গপুর গ্রামীণের সাদাতপুরে, পিংলার দুজিপুরে দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করেছে তৃণমূল। তিনটি এলাকাতেই রাজ্য সভাপতির সভার প্রস্তুতি কর্মসূচি ছিল। রবিবার বিকেলে খাঁদিবাঁধে একদল তৃণমূলের লোক দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর অতর্কিতে হামলা করে। ওই এলাকায় বিজেপির সভা হওয়ার কথা ছিল। সোমবার একই ঘটনা ঘটে পিংলার দুজিপুর, খড়্গপুর গ্রামীণের সাদাতপুরে। দুজিপুরে তো প্রস্তুতি সভা শুরুই করা যায়নি। বিজেপির জেলা নেতা বাবলু বরম, জেলা নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যরা পিংলায় যাওয়ার আগেই তৃণমূলের লোকজন সভাস্থলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
এ দিন দুপুরে দুজিপুর বাজারের কাছে সভা ডেকেছিল বিজেপি। মাইক বাঁধা চলাকালীনই দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর তৃণমূলের জনা পঞ্চাশেক লোক হামলা চালায় বলে বিজেপির অভিযোগ। বিজেপির চার জন জখম হন। তাঁদের পিংলা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তিন জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয় বিজেপির তরফে তৃণমূলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
কাল, বুধবার মেদিনীপুরে সভা রয়েছে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের। তারই সমর্থনে শহরে দলের কর্মী-সমর্থকদের মিছিল সোমবার।
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই পিংলায় শক্তি বেড়েছে বিজেপি-র। এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের পিংলা ব্লক সভাপতি গৌর ঘোড়াইও বিজেপিতে এসেছেন। এ দিন জখম হন বিজেপির দুজিপুর অঞ্চল সভাপতি নারায়ণ হুই, জেলা বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্য নমিতা দুয়ারী, বিজেপি কর্মী বাবলু শূর ও কিঙ্কর মালাকার। নারায়ণবাবু বলেন, “সভার ওখানে ভাঙচুর হতেই আমরা পুলিশে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আসতে দেরি করে। আমাদের উপর টাঙি নিয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাম চন্দ্রের নেতৃত্বে হামলা হয়।” বিজেপির জেলা নেতা বাবলু বরম, অরূপ দাসেদের বক্তব্য, “তৃণমূল আমাদের সভা আটকানোর চেষ্টা করছে।”
রাহুল সিংহের সভাকে যে তৃণমূল নেতৃত্ব হালকা ভাবে নিচ্ছেন না, তার ইঙ্গিত মিলেছে আগেই। রবিবার মেদিনীপুরে জেলা তৃণমূলের বর্ধিত সভায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বুধবার জেলার সমস্ত অঞ্চল এবং ওয়ার্ডে মিছিল করতে হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, বিজেপির সভায় ভিড় ঠেকাতেই তৃণমূলের এই কৌশল। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদ-সহ নির্দিষ্ট কিছু দাবির প্রেক্ষিতেই ওই দিন দলের সকলে পথে নামবেন।
৩০ ডিসেম্বর দুই মেদিনীপুরের কর্মীদের নিয়ে খড়্গপুরের রূপনারায়ণপুরে সাংগঠনিক সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় ৫০ হাজার কর্মী থাকবেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। তার আগে বিজেপির সভায় কত জমায়েত হয়, তা নিয়েও চর্চা চলছে। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবুর দাবি, “রাহুল সিংহের সভায় রেকর্ড জমায়েত হবে।”
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy