এলাকায় সন্তোষ রাণা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
দুঃস্বপ্নের স্মৃতি এখনও টাটকা।
সোমবার রাতে খড়্গপুর ২ ব্লকের লছমাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগরে কংগ্রেস ও বাম কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পর গ্রাম জুড়ে এখন শ্মশানের শান্তি। বুধবার ঘাটাল কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণা-সহ বাম প্রতিনিধি দল রাধানগর গ্রামে যান। সন্তোষবাবুর সঙ্গে ছিলেন খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক নাজমূল হক-সহ বাম প্রতিনিধিরা। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি গিয়ে কথা বলেন সিপিআই প্রার্থী। মঙ্গলবার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে রাধানগরে আহত দলীয় কর্মীদের দেখতে যান ঘাটাল কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া।
বাড়ি ভাঙচুর হওয়ায় সর্বস্বান্ত এক সিপিএম সমর্থক নিয়তি সিংহ বলেন, “ভোট শেষ হতে পুলিশ যখন চলে গেল, তারপর গ্রামের ছেলেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। আমরা শুধু তৃণমূলের ছেলেদের বলেছিলাম, যাকেই ভোট দিই সেটা কী অপরাধ? এরপরেই মারধরের ভয়ে আমরা অন্যের বাড়িতে চলে যাই। আমার বাড়িটা ওরা ভেঙে দিল। মেয়েটার বিয়ের জন্য বানানো গয়না, ১৫ হাজার টাকাও ওরা লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে।”
কোথাও বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল ভাঙা, লণ্ডভণ্ড বাড়ির আসবাব তো কোথাও পড়ে ভাঙা সাইকেল। সোমবার রাতে রাধানগরে বাম ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ২৪টি বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার বাম প্রতিনিধি দল সিপিএম নেতা শ্যাম মহাপাত্র ও কর্মী-সমর্থক আবাসী সিংহ, নকুল সিংহ, মঞ্জু সিংহের বাড়ি যান। বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে সন্তোষবাবুকে সিপিএম সমথর্ক আবাসী সিংহ বলেন, “বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় নান্টু দোলই, পিন্টু দোলই, প্রশান্ত প্রামাণিকদের মতো ছ’জন প্রকৃত অভিযুক্ত ধরা পড়ল না। আমরা আতঙ্কে আছি, কখন কি হয়। আপনি একটু দেখুন।” কিছুটা এগিয়ে গেলে একইভাবে নকুল সিংহও বলছিলেন, “আমি মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি এসেছি। ওই রাতে আমাকে ওরা মারধর করে। জোর করে এই ঘটনা সিপিএম ঘটিয়েছে বলে বলতে আমাকে বাধ্য করে। আমার কথা ওরা রেকর্ডও করে।” বাম প্রতিনিধি দল অবিলম্বে নকুলবাবুকে সেই কথা লিখিতভাবে পুলিশে জানানোর পরামর্শ দেন।
সিপিএম সমর্থক মঞ্জু সিংহ অভিযোগ করেন, “বাড়ি ভাঙচুরের সময় বাড়িতে মজুত চালও ওরা নিয়ে পালায়।” বাম কর্মী-সমর্থকদের কথা শুনে সন্তোষবাবু বলেন, “আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান। আমরাও আপনাদের পাশে আছি। ওই ‘ডাকাত’দের শাস্তির জন্য যতদূর যেতে হয় যাব। প্রয়োজনে জাতীয় সড়কে শুয়ে পড়ব।” ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ‘ডাকাত’ বলে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা দেখলাম ডাকতরা এই গ্রামে আক্রমণ করেছিল। অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে পুলিশকে।” সিপিআই প্রার্থী দাবি করেন, রাজ্য সরকারেরও দায়িত্ব এই গরীব পরিবারগুলিকে সাহায্য করা। এর জন্য লড়াইয়েরও ডাক দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy