মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের এই ব্যস্ত ছবিই দেখা যাবে আজ। —নিজস্ব চিত্র।
বাস নয়, শহিদ দিবসের সমাবেশে ট্রেনে করেই যেতে হবে। দলের কর্মী-সমর্থকদের এমনই নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল। ইতিমধ্যে যে সব ব্লকের দলীয় নেতৃত্ব বাস ভাড়া করে নিয়েছিলেন, তাদের বলা হয়েছে বাসে চেপে কর্মী-সমর্থকরা নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছতে পারবেন। তবে হাওড়া পৌঁছতে হবে ট্রেনে। সেখান থেকে মিছিল করে ধর্মতলায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দলের কর্মী-সমর্থকদের আমরা ট্রেনে করেই সমাবেশে যাওয়ার কথা বলেছি। সেই মতো ব্লকস্তরে পদক্ষেপও করা হয়েছে।”
আজ, ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে সমাবেশ হবে কলকাতার ধর্মতলায়। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ জানিয়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই সমাবেশে যাবেন। কলকাতার সমাবেশে যোগ দিতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একটা বড় অংশ এতদিন বাসেই যেতেন। দলের তরফে এ জন্য বাস ভাড়া করা হত। হঠাৎ কেন সিদ্ধান্ত বদল? তৃণমূল সূত্রে খবর, এর ফলে একদিকে যেমন বাস ভাড়া বাঁচবে, তেমনই কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা দেখা দেবে। তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের মতে, বাসে ৫০-৬০ জন মিলে যাওয়ার যা আনন্দ, ট্রেনে কয়েকশো কর্মী-সমর্থকের একসঙ্গে যাওয়ার আনন্দ তার থেকে ঢের বেশি। মেদিনীপুর শহরের তৃণমূল নেতা স্বপন পালের কথায়, “ট্রেনে করে সমাবেশে যাওয়ার উন্মাদনাই আলাদা।”
নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ব্লকস্তরে পদক্ষেপও শুরু হয়েছে। তৃণমূলের ডেবরা ব্লক সভাপতি রতন দে বলেন, “এ বার আমরা ট্রেনে করেই কলকাতার সমাবেশে যাবো।” তিনি জানান, যে সব এলাকার নেতারা আগে থেকে বাস ভাড়া করে নিয়েছিলেন, তা বাতিল করা হয়েছে।” তৃণমবলের শালবনি ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহ, নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দও জানালেন, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ মতো কর্মী-সমর্থকরা সকলে বাস করেই কলকাতার সমাবেশে যাবেন। ইতিমধ্যে সেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ছবিটা যে অন্য বছরের তুলনায় আলাদা, তা মানছেন বাস-মালিকরাও। জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “সমাবেশের জন্য আগের ছেতে এ বার অনেক কম সংখ্যকই বাস ভাড়া করা হয়েছে। কিছু বাস আগে থেকে ভাড়া করা হয়েছিল। পরে তা বাতিল করা হয়।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়ে প্রতিদিন আটশোরও বেশি বাস চলাচল করে। রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশে যাওয়ার জন্য বাস তুলে নিলে সব থেকে ভোগান্তি হয় সাধারণ মানুষের। ট্রেকার বা অন্য গাড়িতে বাদুড়ঝোলা হয়ে পৌঁছতে হয় গন্তব্যে। আজ, সোমবার তাহলে বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকবে? মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় বাস ভাড়া করা হয়েছে নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছনোর জন্য। ঝাড়গ্রাম, খড়্গপুর মহকুমায় এমনটাই হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি যা তাতে পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে না। রাস্তায় বাস থাকবে।”
মেদিনীপুর- খড়্গপুরের মতো স্টেশনের সামনে তৃণমূল ক্যাম্পও তৈরি করেছে। দল ক্ষমতায় আসার পর দলের একাংশ নেতা-কর্মীর আচার-আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারও কারও বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও উঠছে। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় জেলা এসে খোদ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বার্তা দিয়েছেন, দল সকলের উপর নজর রেখেছে। শুধুমাত্র নিজে প্রতিষ্ঠিত হবেন, এই আশা নিয়ে যদি কেউ দল করেন, তাহলে তাঁর সেই আশা কখনও পূরণ হবে না। দল তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপই করবে। পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে জেলা নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy