আপাতত ট্রেকার, মোটর চালিত ভ্যানই ভরসা। ছবি: আরিফ ইকবাল খান
বাস ও ট্রেকার সংখ্যায় কম। নেই পর্যাপ্ত ভ্যান ও রিকশাও। ফলে শিল্পশহরে সামান্য দূরত্ব যেতেও একাধিকবার যান বদলাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা।
হলদিয়া শহরের মধ্য দিয়ে গিয়েছে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক। শহরের মধ্য দিয়ে তমলুক-হলদিয়া রাজ্য সড়কও গিয়েছে। জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়কে দীর্ঘ দূরত্বের বিভিন্ন রুটের বাস মেলে। তবে শহরের অভ্যন্তরে স্বল্প দূরত্বে যেতে হলেও বাস বা ট্রেকার না মেলায় সমস্যা হয়। অনেক রুটে বাস ও ট্রেকার চলাচল করলেও তা অপর্যাপ্ত। সম্প্রতি শিল্পশহরের পরিবহণ সমস্যা দূর করতে হলদিয়া পুরসভা ও পূর্ব মেদিনীপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর হলদিয়া পুরসভা এলাকায় অটো চালাতে উদ্যোগী হয়েছে। পুজোর আগে পরিবহণ দফতরের এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
হলদিয়া টাউনশিপ থেকে হলদিয়া মহকুমা আদালত, হলদিয়া পুরসভা, হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা (এইচডিএ) বা সিটি সেন্টার শপিংমল যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনও বাস মেলে না। নেই কোনও অটো বা ভ্যানের ব্যবস্থাও। ফলে টাউনশিপের বাসিন্দাদের বাসে করে গিয়ে প্রথমে সিটি সেন্টার মোড়ে নামতে হয়। সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেঁটে তারপরে ভ্যানে করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে হয়। মঞ্জুশ্রী মোড় থেকে বাস বা ট্রেকার পাওয়া গেলেও তাতে খুব ভিড় হয়। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হন নিত্যযাত্রীরা। মঞ্জুশ্রী মোড় থেকে পুরসভা বা আদালত যাওয়ার বাস বা ট্রেকারও অমিল। টাউনশিপ অথবা হলদিয়া রেল স্টেশন থেকে আজাদ হিন্দ নগর হয়ে এইচআইটি’র সামনে দিয়ে বড় রাস্তা থাকলেও সেখানেও বাস বা ট্রেকার চলে না। টাউনশিপ থেকে আজাদহিন্দ নগর হয়ে ক্ষুদিরাম নগর পর্যন্ত রুটে দু’একটি ট্রেকার চলে। তবে নির্দিষ্ট টাইম টেবিল না থাকায় সবসময় ট্রেকার মেলে না। রানিচক থেকে এইচআইটি রুটে কিছু রিকশা চলাচল করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ওই এলাকায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে ওই পথে অনেক ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করেন। সবসময় যানবাহন না মেলায় স্কুলে যাতায়াত করতে সমস্যায় পড়ে তারা। সিইএসসি থেকে মঞ্জুশ্রী মোড় পর্যন্ত রুটে হাতে গোনা কয়েকটি বাস ও ট্রেকার চলে। ফলে অনেক সময় বাস পেতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়।
হলদিয়া মহকুমা আদলতের কর্মী শুভঙ্কর পণ্ডা নন্দীগ্রামের চিন্নগ্রামের বাসিন্দা। সপ্তাহে পাঁচ দিন নন্দীগ্রাম থেকে হলদি নদী পেরিয়ে আদালতে কাজে আসতে হয় তাঁকে। শুভঙ্করবাবু বলেন, “হলদিয়া টাউনশিপের ফেরিঘাট থেকে সরাসরি আদালত পর্যন্ত যাওয়ার জন্য কোনও বাস বা ট্রেকার নেই। ফলে প্রথমে ফেরিঘাট থেকে প্রায় ৫০০ মিটার হেঁটে টাউনশিপ বাসস্ট্যান্ডে আসতে হয়। সেখান থেকে বাসে করে সিটি সেন্টারে গিয়ে নামতে হয়। সিটি সেন্টার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে বা ভ্যানে যাতয়াত করতে হয়।” তাঁর কথায়, “টাউনশিপ ফেরিঘাট থেকে অটো পরিষেবা চালু হলে হলদিয়ার বাসিন্দাদের পাশাপাশি নন্দীগ্রামের বাসিন্দাদেরও উপকার হয়।” হলদিয়া টাউনশিপের বাসিন্দা ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী বলেন, “টাউনশিপ থেকে পুরসভা, আদালত, এইচআইটি, এইচডিএ যাওয়ার সরাসরি কোনও গাড়ি না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। শহরে অটো চললে হলদিয়ার বাসিন্দাদের সমস্যা কমবে।”
পুজোর আগেই পুর্ব মেদিনীপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের বোর্ড মিটিংয়ে হলদিয়া পুর-এলাকায় একশো অটো চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শহরে অটো চালানোর জন্য ১০০ জনকে প্রস্তাব পত্রও দেওয়া হয়েছে। হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “হলদিয়া শহরের বিভিন্ন রুটে যাত্রিবাহী যানবাহন কম থাকায় বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হয়। সেই সমস্যা দূর করতে পুরসভার পক্ষ থেকে হলদিয়ায় অটো চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হলদিয়া শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় ২০টি রুটও চিহ্নিত করা হয়েছে। শহরে একশোটি অটো চালানোর বিষয়ে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর অনুমোদনও দিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy