তৃণমূলের লিফলেট।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চিরসঙ্গী। আর তার জেরে প্রকাশ্যে মারামারিও নতুন কিছু নয়। কিন্তু নির্বাচনের সময়, দল যে এ সব মেনে নেবে না তা সাফ জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার জেলায় নির্বাচনী জনসভার ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, সব্বাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। কোথায় কোন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সে কথাও জানিয়ে দে ন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী আগেও এমন কথা বলেছিলেন। যদিও তা কতটা কার্যকরী হয়েছে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীরই। এই কারণেই সোমবার কড়া ভাবে সে কথা ফের মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতাদের মনে করিয়ে দিলেন বলে দলীয় নেতাদের অনুমান। প্রকাশ্যে কেশপুরের সভায় নিজেও জানিয়ে দিলেন, “সবাই কাজ করবে। এক-দু’ জন যদি খারাপ করে আমি তা খতিয়ে দেখি। কাউকে ছাড়ি না।” জেলা সভাপতি দীনেন রায়ও অবশ্য ওই দিন থেকেই দলীয় নির্বাচন বিধির কথা নেতাদের জানাতে শুরু করেন। এ নিয়ে একটি লিফলেটও বানিয়েছেন তিনি। যা জেলা, ব্লক থেকে বুথ স্তরের কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। যেখানে দেওয়াল লিখন, পাড়া বৈঠক, মিছিল, মিটিং কিভাবে করতে হবে, সেখানে বক্তব্য কী থাকবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলা রয়েছে। তারই সঙ্গে যেটি বলা হয়েছে, ‘সবার সঙ্গে ভদ্র, নম্র ও শান্তভাবে ব্যবহার করতে হবে। কোনও রকম প্ররোচনায় ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না।” জেলা সভাপতির কথায়, “দীর্ঘদিনের অপশাসনের পর মানুষ তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছেন। আমরাও মানুষকে মর্যাদা দিতে চাই। যাতে একজন কর্মীও কোনও মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করেন, সেদিকে তীক্ষ্ন নজর রেখেছি। তার সঙ্গে আচরণবিধিও সকলকে জানিয়ে দিয়েছি।”
এ বারের নির্বাচন কী ভাবে করবে তৃণমূল? ৫ এপ্রিলের মধ্যে সমস্ত বুথে দেওয়াল লিখন শেষ করতে হবে। ৩ এপ্রিল থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত বুথে পাড়া বৈঠক ও মিছিল করতে হবে। কিন্তু সকলে যদি না করেন? না ফাঁকি দেওয়ার জায়গা নেই। কোন বুথে কবে পাড়া বৈঠক হল, বৈঠকে কে কী বক্তব্য রাখলেন, সাধারণ মানুষ কী বললেন, তা খাতায় লিপিবদ্ধও করতে হবে! প্রচারের প্রধান বিষয় হবে, সিপিএমকে আক্রমণ। মিটিংয়ের আগে প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতিও নিতে বলা হয়েছে।
এই পদ্ধতি মেনে কাজ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেও নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কোন বিধানসভা এলাকার দায়িত্বে কে থাকবেন, তা ঠিক করে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। পাঁশকুড়ার দায়িত্বে থাকবে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, কেশপুরে থাকবে মেদিনীপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি আশিস চক্রবর্তী, ডেবরাতে স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি প্রভৃতি। আর জেলার কার্যকর্ম দেখতে জেলা সভাপতির পাশাপাশি থাকবেন দুই কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ ও নির্মল ঘোষ। নির্বাচনের সময়েও যাতে নিজেদের অনুগামীদের দায়িত্ব না দেওয়া হয়, যাতে বিভাজন তৈরি না হয়, সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই দায়িত্ব দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy