বিজেপির মিছিলে কবিতা দাস। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির বিজয় মিছিলে দেখা গেল সেই যুবতীকে, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ছাপ্পাভোটের প্রতিবাদ করায় যাঁকে জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়েছিল। ওঠবোস করানো হয়েছিল কান ধরে।
ওই যুবতী এক সময়ে তৃণমূলই করতেন। শুধু তাই নয়, তাঁর স্বামী শাসক দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যও ছিলেন।
পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা ভোট। মাঝে মাত্র এক বছরের ব্যবধান। পাল্টে গিয়েছে ছবিটা। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এলেন সেই যুবতী কবিতা দাস। দলবদলের পরে কী বলছেন তিনি? কবিতার কথায়, ‘‘আমি এখন বিজেপির সঙ্গে আছি। বিচারের অপেক্ষাতেও আছি।’’ কবিতার স্বামী গোপাল দাস বলেন, ‘‘আমরা এখন বিজেপি করছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এ বার ভোটে এলাকার মানুষ তৃণমূলকে হারিয়ে দিয়েছেন। আমরা খুশি। বিচারের জন্য লড়াই যেমন চলছে তেমনই চলবে।’’ এ দিনের বিজয় মিছিলে ছিলেন গোপালও।
২০১৮ সালের ১৬ মে পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরিয়েছিল। পরের দিন কবিতাকে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ডেকে জুতোর মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয়ের সামনে কয়েকশো বার কান ধরে ওঠবোসও করানো হয়েছিল। ভোটের দিন ছাপ্পাভোট দেওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন কবিতা। তারপরই জোটে হেনস্থা। ঘটনার পর বাগডুবিতে ছুটে এসেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। এসেছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ। কবিতার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন সকলে। সেদিন স্থানীয় অনেকে ঘটনার সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু শাসক দলের ভয়ে কেউ টুঁ শব্দ করেননি। প্রতিবাদ তো দূর অস্ত। ঘটনার পরে ওই পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েন। এ বার লোকসভা ভোটে বাগডুবির বুথে এ বার ‘লিড’ পায়নি তৃণমূল। এই বুথে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৪১০। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৪৫৩। আর বামেরা পেয়েছে ২২। পাশের একটি বুথেও হেরেছে তৃণমূল।
কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বিজেপির মেদিনীপুর গ্রামীণ পশ্চিম মণ্ডলের অন্তর্গত। বিজেপির মেদিনীপুর গ্রামীণ পশ্চিম মণ্ডলের সভাপতি সুজয় দাস বলেন, ‘‘বাগডুবির বুথে তৃণমূল হেরেছে। এলাকার মানুষ ভোটেই ওদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন।’’ সুজয় মানছেন, ‘‘কবিতারা আর তৃণমূলের সঙ্গে নেই। বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। এদিনের বিজয় মিছিলেও ওঁরা ছিলেন।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘আমরা ওঁদের পাশে ছিলাম। আগামী দিনেও থাকব।’’ কবিতার স্বামী গোপালকে দলের স্থানীয় এক পদ দেওয়া হতে পারে বলেও বিজেপি সূত্রে খবর। এই দলবদলকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘বন্দুকের ভয়ে, টাকার লোভে কেউ কেউ বিজেপিতে যাচ্ছেন। পরে আবার তৃণমূলে ফিরে আসবেন।’’
এ দিন মিছিলের আগে- পরে গেরুয়া আবির মেখে বিজয়োৎসবে মাততে দেখা গিয়েছে কবিতাকে। গলা মিলিয়েছেন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy